হোম > ছাপা সংস্করণ

অনিন্দ্যসুন্দর হজম টিলা

বিকুল চক্রবর্তী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) 

চা নিয়ে কবিতা লিখেছেন এক চীনা কবি। কবি লোটাংয়ের সেই লেখা বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘প্রথম কাপ আমার ঠোঁট ও গলা ভেজায়, দ্বিতীয় কাপ আমার একাকিত্ব দূর করে, তৃতীয় কাপ নীরস অস্ত্রের খোঁজ করে।’ চা পানের এমন অনুভূতি কমবেশি আমাদের সবারই জানা। কিন্তু যে বাগানে এই চা উৎপাদিত হয়, সেখানে অন্তত একবার না গেলে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য দেখা থেকে বঞ্চিতই থাকবেন। তেমনই এক চা-বাগান শ্রীমঙ্গলের বিদ্যাবিল। যেখানে রয়েছে দেশের অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা হজম টিলা।

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গা ঘেঁষে বিদ্যাবিলের অবস্থান। যেখানে রয়েছে ছবির মতো চা-বাগান, আছে পাহাড়ি ছড়া আর লেবুবাগান। চা-বাগানের আঁকাবাঁকা পথ, ঢেউখেলানো সমান্তরাল রাস্তা নিমেষেই যে কারও বিষণ্ন মনে স্বর্গীয় সুখ এনে দিতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যাবিলের এক পাশে রয়েছে সবুজ বনাঞ্চল। যেখানে যুগ যুগ ধরে বাস করে আসছেন খাসিয়ারা। আর এসব সৌন্দর্য এক জায়গা থেকে উপলব্ধি করতে হলে যেতে হবে বিদ্যাবিলের পূর্ব সীমান্তের সবচেয়ে উঁচু টিলায়। স্থানীয় লোকজন এই টিলার নাম দিয়েছেন হজম টিলা। তাঁরা জানান, এই টিলাটি এত ওপরে যে এখানে ওঠা বেশ কষ্টসাধ্য। প্রায় দুই-আড়াই কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা ঘুরে সেখানে উঠতে হয়। দুপুরবেলা খেয়ে যদি কেউ এই টিলায় ওঠেন তাহলে তাঁর আবার খেতে ইচ্ছা হয়। অর্থাৎ খাবার হজম হয়ে যায়। যে কারণেই হজম টিলা হিসেবে এটা বেশি পরিচিতি পেয়েছে।

নিচ থেকে হজম টিলায় পায়ে হেঁটে উঠলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লাগবে। মোটরসাইকেল বা গাড়ি নিয়ে উঠলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগে। হজম টিলার আশপাশের সব টিলায় চা-বাগান সম্প্রসারিত হয়েছে। এটি চা-বাগানের জমি হলেও হজম টিলাতে এখনো চা-গাছ রোপণ করা সম্ভব হয়নি। এ জায়গায় ওঠার পর যে কারোরই মনে হবে, তিনি যেন সবুজ বৃত্তের মধ্যে প্রবেশ করেছেন। হজম টিলা থেকে সকালের সূর্যোদয় এবং বিকেলের সূর্যাস্তের দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর।

শ্রীমঙ্গল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সমন্বয়ক তাজুল ইসলাম জাবেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হজম টিলা শ্রীমঙ্গলের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় হবে বলে আমাদের ধারণা। তা ছাড়া, এর সৌন্দর্য পর্যটকদের মনের খোরাক জোগাতে সক্ষম। এখানে প্রতিবছর দেশের নানা জায়গা থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসে।’

দর্শনার্থী অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘হজম টিলার ওপর থেকে নিচের দিকে এক রকম সৌন্দর্য। আবার নিচ থেকে ওপরের দিকে তাকালেও অন্য রকম এক অনুভূতি আসে। আর এই টিলায় যাওয়ার পথটিও অন্য টিলার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন রকম।’

স্থানীয় আদিবাসী নেতা ফেলিক্স আশাক্রা জানান, একসময় এই এলাকাটি জঙ্গলে আবৃত ছিল। প্রচুর পরিমাণে বন্য প্রাণীও ছিল। এখন বন নাই বললেই চলে। চা-বাগানের কারণে লোকজনের যাতায়াতে বন্য প্রাণীরা এখান থেকে সরে গেছে। তিনি বলেন, ‘বাগানের মানুষ হজম টিলায় সব সময় যেতে সাহস করে না। কারণ, এটি অনেক উঁচুতে। তবে বাগান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে টিলায় উঠতে পারেন পর্যটকেরা।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ