লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চরাঞ্চলে মাল্টা চাষে সফল হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা রেজাউল করিম মুক্তার। উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের হাজীমারায় বাগানটি দেখতে প্রতিদিনই লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন। দেড় হাজার গাছ নিয়ে আট একর জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন এ বাগান। তাঁর দেখাদেখি অনেকেই এখন মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তার হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বেড়ির মাথা এলাকার বাসিন্দা। ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর তিনি বড় ভাই আজিম ভূঁইয়ার উৎসাহে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হন। আত্মীয়দের কাছ থেকে হাজীমারা এলাকায় আট একর জমি ১০ বছরের চুক্তিতে ১২ লাখ টাকায় ভাড়া নেন। কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ না থাকায় ইউটিউব দেখে দেখে জমি তৈরি করেন। প্রথমে লাগান তিন হাজার কলমের চারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবগুলো চারাগাছ মরে যায়। এরপরও তিনি দমে যাননি।
প্রায় ১০ লাখ টাকা লোকসানের ভার নিয়েই আবারো চাষাবাদে আগ্রহী হন। ওই সময় রাজশাহী থেকে পুনরায় এক হাজার এক বছর বয়সের কলম চারা এনে আবারও রোপণ করেন।
ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ধাপে ধাপে এখন বাগানে দেড় হাজার ফলবান গাছ রয়েছে। বর্তমানে বাগানে ‘বারি মাল্টা-১’ জাতের পাশাপাশি আরও প্রায় এক হাজার বিভিন্ন জাতের ফলবান গাছ রয়েছে। দুই একর জমিতে রয়েছে চার হাজার পেয়ারা গাছের বাগান। বাগানে নিয়মিত কর্মসংস্থান হয়েছে ১০ জন শ্রমিকের।
বাগানে গেলে দেখা যায়, সারি সারি মাটির উঁচু লেনের ওপরে দাঁড়িয়ে মাল্টাগাছ। মাল্টার ভারে গাছের ডালপালা নুয়ে পড়ছে। সবুজ গাছের সঙ্গে সবুজ ফলের আবহে সর্বত্র সবুজের সমারোহ। তবে এ বছর সেচে কিছুটা বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগানে কাজ করা শ্রমিকেরা।
উদ্যোক্তা রেজাউল করিম মুক্তার বলেন, `মাল্টা চাষাবাদ আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দুই বছর ফলনে লাভের আশা না করে তা ছেঁটে ফেলে দিয়ে গাছকে বড় করে তুলেছি। তৃতীয় বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাল্টা বেচা হয়েছে।