বিশ্বনাথ উপজেলার শুঁটকি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুরের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের নানা স্থানে শুঁটকি পাঠাচ্ছেন।
সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাশে লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, শুঁটকি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ শুঁটকি শুকাতে ব্যস্ত, কেউবা শুঁটকি গাড়িতে তোলার কাজে ব্যস্ত। সবার মধ্যে নীরব প্রতিযোগিতা।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর নভেম্বর মাস থেকে শুঁটকির মৌসুম শুরু হয়। তখন ব্যবসায়ী-শ্রমিক সবার মধ্যেই শুরু হয় চাঞ্চল্য। কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন সবাই। সব ধরনের মাছ শুঁটকি করা হলেও ট্যাংরা ও পুঁটি মাছের শুঁটকির চাহিদাই বেশি। এই শুঁটকি উৎপাদনের কাজ চলে বর্ষার আগ পর্যন্ত। এর মধ্যেই অনেক ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট আড়তে শুঁটকি পৌঁছে দেওয়ার কাজ সারেন। কেউ কেউ সারা বছরের জন্য শুঁটকি মজুত করেন।
প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ী এখানে শুঁটকি ব্যবসা করেন। সব মিলিয়ে ২ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন এই শুঁটকি আড়তে। প্রতি শ্রমিক গড়ে ৪০০ টাকা করে মজুরি পান।
হেলাল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি এই বছর থেকে শুঁটকি ব্যবসায় নেমেছেন। গত পাঁচ মাসে তিনি ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ১ লাখ টাকা আয় করতে সমর্থ হয়েছেন।
ব্যবসায়ী আউয়াল বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনো লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি। প্রতিবছরই ব্যয় বাদ দিয়ে ২ লাখের ওপরে লাভ থাকে।’
শুঁটকি কোথায় পাঠান জানতে চাইলে গিয়াস, জাকির হোসেন, কালা মিয়া বলেন, আমরা সিলেটের বৃহৎ শুঁটকি আড়ত ছড়ারপার এলাকায় শুঁটকি পৌঁছে দিই। সেখান থেকে শুঁটকি সারা দেশে পাঠানো হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, ‘কয়েক বছর আগে এই এলাকার যুবকেরা বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াত। তাঁরা নানা অপকর্মেও জড়িত ছিল। শুঁটকি ব্যবসা সেই অভিশাপ থেকে আমাদের যুবকদের মুক্তি দিয়েছে। পাল্টে গেছে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থা।’