প্রিয় এসএসসি শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছ। তোমাদের পরীক্ষা একদম দোরগোড়ায়। ভয় হচ্ছে পরীক্ষা নিয়ে? না, একদম ভয় পাওয়া চলবে না। পরীক্ষা শিক্ষারই একটি অংশ। তাই পরীক্ষাকে মোটেও ভয় পাওয়া যাবে না। পরীক্ষার আগে যদি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাও তাহলে কিন্তু পরীক্ষা এমনিতেই খারাপ হতে বাধ্য। তাই মানসিকভাবে অনেক দৃঢ় আর সাহসী হতে হবে। পরীক্ষাকে শুধু শিক্ষার একটা অংশ মনে করবে। প্রতিদিন রুটিনমাফিক স্বাভাবিক সব কাজ চালিয়ে যাবে। শেষ মুহূর্তে পড়াশোনাটা আরেকটু ঝালাই করে নাও। তোমাদের জন্য থাকছে কিছু টিপস। আশা করি, বিষয়গুলো অনুসরণ করলে অবশ্যই তা ফলপ্রসূ হবে।
- n পরীক্ষার এডমিট কার্ড পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কয়েকটি ফটোকপি করে বাসায় সংরক্ষণ করবে, যেন কোনো কারণবশত মূল কপি হারিয়ে গেলে ফটোকপি প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সত্যায়িত করে পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়া যায়।
- n পড়ার টেবিলের সামনে সদ্য সংশোধিত পরীক্ষার রুটিনের এক কপি লাগিয়ে রাখবে।
- n পরীক্ষার একটি বিষয় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরবর্তী পরীক্ষার বিষয় রুটিন দেখে নিশ্চিত হয়েই প্রস্তুতি নেবে। লোকমুখে শুনে কখনোই প্রস্তুতি নেবে না।
- n পরীক্ষার আগের রাতে কখনোই রাত জাগবে না। যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে রিভিশন দেবে।
- n পরীক্ষার বিষয় নিয়ে কোনো অবস্থাতেই বাড়তি চাপ বা টেনশন নেবে না আর কোনো কিছুতেই তাড়াহুড়া করবে না।
- n পরীক্ষার আগের রাতেই এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, স্কেল, কলম পেনসিল ক্যালকুলেটর ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফাইলে রেডি করে রাখবে।
- n হালকা ব্যবহার করা কিছু কালো বলপয়েন্ট কলম রাখবে তাতে হাতের লেখার গতি পাবে, যা নতুন কলমে কিছুটা সমস্যা হয়।
- n পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগেই পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় কিন্তু বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে।
- n রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোড বক্সে অবশ্যই লিখবে এবং খুবই সতর্কতার সঙ্গে কালো বলপয়েন্ট কলম দ্বারা বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই নীল, পেনসিল বা কালো জেল পেন দিয়ে বৃত্ত ভরাট করবে না।
- n সতর্কতার সঙ্গে বৃত্ত ভরাট করতে গিয়েও যদি ভুল হয়ে যায় তবে টেনশন না করে পরীক্ষার হলের দায়িত্বরত পর্যবেক্ষককে অবশ্যই বলবে। উনি ঠিক করে দেবে। আর ভুল হওয়ার পরও সঠিক নম্বরটি অবশ্যই বৃত্ত ভরাট করে দেবে।
- n নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন পাওয়ার পর সবার আগে সেট কোড দেখে তা সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করবে। সেট কোডের ভুল সংশোধন করা জটিল বিষয়।
- n খাতায় মার্জিন টানবে এবং এই মার্জিন কোনো অবস্থাতেই এক স্কেলের যেন বেশি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে।
- n পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরিধান করেই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে, পরীক্ষার হলের পর্যবেক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করবে ও সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।
- n পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে নিজের অর্জিত জ্ঞান আনন্দের সঙ্গে বহিঃপ্রকাশের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করবে।
- n পরীক্ষার আগে ও পরীক্ষা চলাকালীন এহেন কার্য থেকে দূরে থাকবে যাতে অসুস্থ হয়ে পড় এবং হাত, হাতের আঙুল বা চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
- n পরীক্ষার হলে তোমার সিটের আশপাশে অপ্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র থাকলে তা পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে আনবে এবং তা পরিষ্কার করে ফেলবে।
- n প্রশ্নপত্রে কোনো প্রকার দাগ বা চিহ্ন দেবে না।
- n পরীক্ষার হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে।
- n পরীক্ষার হলে ধীরস্থির, শান্ত মনোভাব নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বসবে এবং মনে মনে প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার সহায়তা চাইবে।
- n প্রশ্নটি হাতে পাওয়ার পর একদম হতাশ কিংবা অতিরিক্ত উল্লসিত হবে না। যতটুকু পারো, যা, যা মনে আছে তাই আগে লেখা শুরু করো।
- n প্রশ্ন বাছাই করা একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় নেওয়া যাবে না। বিশেষ করে এ বছরও শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা হবে, প্রশ্নের অনেকগুলো বিকল্প দেওয়া থাকবে, এমনকি বহুনির্বাচনি অংশেও বাছাই করে উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে, তাই এ ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে সময়ের অপচয় নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই সব প্রশ্ন পড়ে বাছাই করতে আলাদা সময় নষ্ট হয়।
পরিশেষে সবার চূড়ান্ত সফলতা কামনা করছি।
মুহাম্মদ শাহীন আল মামুন, সিনিয়র শিক্ষক, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, টাঙ্গাইল।