নওগাঁর মান্দায় মৎস্যজীবী পল্লির দুই নারীসহ চারজনকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছেন। গত রোববার রাতে সগুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন সগুনিয়া গ্রামের আব্দুল গফুর (৫০), হালিমা বেগম (৪৫), খতিব সরদার (৩০) ও সায়েরা বিবি (৫০)। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সগুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা খোদাবক্স সরদার বলেন, রোববার সন্ধ্যার পর সগুনিয়া গ্রামের মোড়ে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমনের বৈঠক ছিল। রাত ৮টার দিকে দলবল নিয়ে সুমন সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় গ্রামের আব্দুল গফুরের কাছে ভোট চাইলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী আলতাজ উদ্দিনকে ভোট দেওয়ার কথা জানান। এতে সুমন ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে মারধর শুরু করেন। তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী হালিমা বেগম, ছেলে খতিব সরদার ও ভাবি সায়েরা বিবিকে পিটিয়ে জখম করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুমনের কর্মীরা রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রোববার রাতে গ্রামটিতে তাণ্ডব চালান। পরে তাঁর কর্মীরা বলাক্ষেত্র স্লুইসগেট এলাকায় মৎস্যজীবীদের বেশ কয়েকটি জালসহ একটি অস্থায়ী ঘর ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়িয়ে দেন।
ভারশোঁ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সগুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান আলী বলেন, গ্রামের আব্দুল গফুরসহ কয়েকজনকে মারধর করেছে নৌকার প্রার্থী সুমন।
মৎস্যজীবী আতাউর রহমান বলেন, হামলা চালানোর সময় ভয়ে নৌকায় চড়ে তাঁরা নদীর ওপারে চলে যান। পরে সুমনের লোকজন বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ৩ মণ মাছ লুট করে নিয়ে যান।
ভারশোঁ ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আলতাজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তাঁর কর্মী ও ভোটারদের দফায় দফায় মারধর ও নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন নৌকার প্রার্থী সুমন ও তাঁর লোকজন। গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পাকুড়িয়া শহীদ বাজার এলাকায় দুই কর্মীকে পিটিয়ে জখম করেছেন তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা।
জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, ‘সগুনিয়া গ্রামে ভোটের প্রচার করতে গেলে গ্রামবাসী আমাকেসহ কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। সংবাদ পেয়ে অন্য এলাকা থেকে কর্মীরা গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যান। ভোটারদের মারধর, মৎস্যজীবীদের জাল পোড়ানো, মাছ লুট ও গ্রামে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ সত্য নয়। গ্রামবাসী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।