হোম > ছাপা সংস্করণ

ইসমাইলের চিকিৎসা হবে তো!

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

সাহ্‌রি শেষ করে দ্বিতীয় বেলার ঘুমটা আর ঘুমাতে পারেননি আবদুর রাজ্জাক। নিউমার্কেটে তখন আগুন জ্বলছে। সেখানে তাঁরও দোকান আছে। আগুনের কথা শুনে তিনি ছুটে যান নিউমার্কেটে। তখনো ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে পৌঁছায়নি। দোকানের এক কর্মচারী দোকানে ঢুকে কিছু মালপত্র সরানোর চেষ্টা করেন। তাতে শেষরক্ষা হয়নি। চোখের সামনে পুড়ে গেছে মালপত্র। পুড়েছে ক্যাশের টাকা। মালপত্র অল্প যা কিছু সরানো গিয়েছিল, তা-ও নষ্ট হয়েছে পানিতে।

আবদুর রাজ্জাকের দোকানে মসলিন, সেমি মসলিন, আড়ং কটনের কাপড় ও শাড়িতে হ্যান্ড প্রিন্ট এবং ব্লকের কাজ করা হতো। তাঁর একমাত্র সন্তান আবদুল্লাহ আল ইসমাইলের বয়স তিন বছর আট মাস। শিশুটি জন্মের পর থেকেই ভুগছে কিডনির সমস্যায়। ২৬ এপ্রিল ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্জাকের। কিন্তু নিউমার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তাঁকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। রাজ্জাক বললেন, ‘সন্তানের দিকে তাকালে এখন দুনিয়াটা অন্ধকার লাগে। আমি জানি না কী করব।’ তাঁর ছেলের একটি কিডনি সম্পূর্ণ নষ্ট। অন্যটি কাজ করছে। কিন্তু সেটিকে প্রতি মাসে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। এর জন্য ব্যয় হয় ২৫ হাজার টাকা।

রাজ্জাক জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে তাঁরা হিসাব করেছিলেন, তাঁর দোকানে প্রায় ১৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মালপত্র ছিল। অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন আগে ছোট ভাইয়ের এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার করে দেড় লাখ টাকার নতুন পণ্য কিনেছিলেন তিনি। সারা বছরে ঈদের সময় ব্যবসার পরিসর বড় করেই ভাবেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্জাকও তেমন ভেবেছিলেন। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর দোকানের চারজন কর্মচারীর বেতন, বোনাস, সন্তানের চিকিৎসা আর পাওনাদারের টাকা শোধ করার চিন্তায় দুর্বিষহ দিন পার করছেন তিনি।

শুধু আবদুর রাজ্জাক নন, নিউমার্কেটের এমন অনেক ব্যবসায়ীকে চোখের সামনে দেখতে হয়েছে মালপত্র ও ক্যাশবাক্সে থাকা টাকা পুড়ে যেতে। তেমনই একজন দোকানি মামুন।

নিউমার্কেটে তাঁর দুটি দোকান ছিল। দুটিতেই বিক্রি করতেন থ্রিপিস; পাইকারি দরে। এর মধ্যে একটি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, অন্যটির মালপত্র পানি ও ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে।

নিউ সুপার মার্কেটের তিনতলার দোকানগুলোতে মূলত পাইকারি বিক্রি হতো থ্রিপিস, হ্যান্ড প্রিন্ট ও ব্লক প্রিন্টের শাড়ি, পাঞ্জাবি এবং ছেলেদের পোশাক। এই দোকানগুলোর বেশির ভাগ মালপত্র পুড়ে গেছে, কিছু মালপত্র পানি আর ধোঁয়ার কারণে নষ্ট হয়েছে। যাঁদের দোকানের মালপত্র কিছুটা অক্ষত আছে, তাঁরা একটু হলেও ব্যবসার আশা দেখছেন। তবে মার্কেটটি বন্ধ ঘোষণা করায় সে আশাও নিভে গেছে। এখানকার ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রনি জানান, এখন এ জিনিসগুলোর কোনো দাম নেই। নতুন করে আমদানি করতে হবে সব। তবু যে কদিন বাকি আছে ঈদের, মালপত্র যা আছে, তা নিয়েই যত দ্রুত সম্ভব ব্যবসা শুরু করতে চান তাঁরা। 

নিউমার্কেটের চাঁদনী চক ও গাউছিয়া এলাকার একদিকে চলছে ঈদের জমজমাট কেনাকাটা, অন্যদিকে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো দিনের বেলাতেও ডুবে আছে অন্ধকারে। এই অন্ধকার শুধু দোকানগুলোতেই নয়, প্রভাব ফেলেছে সেখানকার ব্যবসায়ীদের জীবনেও। মালাপত্র পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে ভবনের। পানি জমে নষ্ট হয়ে যাওয়া কাপড় এবং আগুনের ধোঁয়ার গন্ধ আরও বেশি আতঙ্কিত করে তুলেছে ব্যবসায়ীদের। এই ঈদে তো নয়ই, কবে আবার ব্যবসা শুরু হবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ