হোম > ছাপা সংস্করণ

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা

নুসরাত জাহান শুচি, সাংবাদিক

যুদ্ধের নিয়ম অনুসারে, বেসামরিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও শিশু সব সময়ই যুদ্ধের বাইরে থাকে। তবে এবার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে সবার আগে মৃত্যুর তালিকার ওপরে অবস্থান করছে নারী ও কোমলমতি শিশুরা।

যেকোনো নারীর জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দের বিষয় সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের কান্নার আওয়াজ শোনা। তবে ফিলিস্তিনের চিত্র এখন বদলে গেছে। এখন যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনি মায়ের কাছে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় তাঁর সন্তানের লাশ খুঁজে পাওয়া। তাই সন্তানের লাশ

খোঁজার জন্য শরীরে নাম লিখে রাখতেও হয়তো হাত কাঁপছে না তাঁদের। তবে সেই কম্পন আমাদের অনুভূতিকে স্পর্শ করতে পারছে না। আর কিছুসংখ্যক মানুষকে ব্যাপারটি স্পর্শ করলেও, তা ঐক্যের অভাবে পরাশক্তির কাছে হেরে যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনিদের ওপর বৃষ্টির মতো বোমা হামলা হলেও আমাদের দেখা ছাড়া কিছুই করার নেই। তবে হামলায় নিহতদের জন্য আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করে প্রতিবাদ করলেও, ইসরায়েলের পণ্য বয়কট করছি না। কারণ আমরা তো কোক, নেসলে কফি, ম্যাগি নুডলস ছাড়া চলতেই পারি না।

মোটকথা, ফিলিস্তিনিদের জন্য আমরা শুধু আফসোসই করে আসছি। তবে নিহতদের জন্য আমাদের যে আফসোস তা অর্থহীনই বটে। একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন, আসলে যারা বোমার আঘাতে মারা গেছে, তারা অনেক বেশি ভাগ্যবান। ওই যে প্রচলিত একটি কথা আছে, ‘বারবার মরার চেয়ে একবারে মরা ভালো।’ বিষয়টা আসলে তাই। প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরার চেয়ে হয়তো একবারে মরে যাওয়াই ভালো।

চলমান এই সংঘাতকে আর যা-ই হোক যুদ্ধ বলা যায় না। কেননা খরগোশ ও কচ্ছপের মধ্যে দৌড় প্রতিযোগিতার গল্প রূপকথায় আছে। কিন্তু হাতির সঙ্গে পিঁপড়ার প্রতিযোগিতার গল্পের ঠাঁই তো রূপকথায়ও স্থান পায়নি। ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধটা কি রূপকথায় 
ঠাঁই না-পাওয়া পিঁপড়া-হাতির যুদ্ধের মতো নয়?

যদি যুদ্ধই বলি তবে কেন বেসামরিক নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুর ওপর এই বর্বরতা? গ্রামাঞ্চলে ঝগড়া হলেই একটা কথা শোনা যেত, হাতে নয় তোমায় ভাতে মারব।

বর্তমান ইসরায়েল সরকার আরও একধাপ এগিয়ে ফিলিস্তিনিদের হাতে ও ভাতেও মারছে। যার সবচেয়ে বড় শিকার নারী ও শিশুরা।

নারীদের দুর্দশা সব ছাড়িয়ে গেছে তখনই, যখন তাঁরা অ্যানেসথেসিয়া ছাড়া অপারেশন থিয়েটারে সিজার করতে ঢুকছেন। যেখানে একজন বঙ্গনারী নরমাল ডেলিভারির কষ্ট নিতেই ভয় পান, সেখানে তাঁদের অবস্থা একবার ভাবুন। শুধু কি তাই? এত কিছুর পর না আছে খাবার আর না আছে পানি। তারপর ঋতুস্রাব তো আছেই। যেখানে এককাপড়ে তাঁরা রাস্তায় ঘুরছেন। এক ফোঁটা পানি পান করার জন্য হাকাকার করছেন। সেখানে ঋতুস্রাবের পরিচর্যা করাটা বিলাসিতা বৈকি। তাই স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য নারীরা চার-পাঁচ মাইল হেঁটে যাচ্ছেন ওষুধ নিতে। তবু সেই কাঙ্ক্ষিত ওষুধ পাবেন কি না, তাতেও সন্দেহ আছে। আর যদি পেয়েও যান, তাহলেও দেখা যাচ্ছে নানা রকম বিপত্তি। মাথা ঘোরা, শরীর দুর্বল, পেটব্যথা, মাথাব্যথাসহ নানান শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে।

সদ্যোজাত শিশুও তাদের বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ফয়েল পেপারে রাখা হচ্ছে শিশুদের। হাসপাতালও তাদের জন্য নিরাপদ নয়। ইসরায়েলি বাহিনী সেখানেও পৌঁছে গেছে। যে হাসপাতালে মানুষ যায় প্রাণ বাঁচাতে, সেই হাসপাতালের আঙিনাতেই দিতে হচ্ছে গণকবর।

এখনো কি নিশ্চুপ থাকবে বিশ্বমোড়ল। তাদের ভূমিকা এখন ঠুঁটো জগন্নাথের মতো হওয়া উচিত? চোখে কালো কাপড় জড়িয়ে বিশ্ব মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকবে আর কত দিন? ফিলিস্তিনি সেই শিশুর কথায়, ‘আমি আল্লাহর কাছে গিয়ে বলে দেব।’ তারপরও বিশ্ববাসীর কর্ণপাত হবে না? যে মানুষগুলো রাতারাতি পরিবারসহ হারিয়েছে ৫০-এর বেশি আত্মীয়, তাদের অনুভূতি কি আমাদের হৃদয়ে আঁচড় কাটতে পারবে না? কোথাও কিছুই কি নেই করার? যুদ্ধের নামে এই খেলার শেষ কোথায়?

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ