গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় বন্যায় বিধ্বস্ত সেতু গত তিন বছরেও পুনর্নির্মাণ বা সংস্কার করা হয়নি। এবার বাঁশের সাঁকোটিও নড়বড়ে। এতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। ফলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বেচাকেনায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যায় ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামীসহ কয়েকটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পানির প্রবল তোড়ে ভেঙে যায়। পানির স্রোতে উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ফুলছড়ি উপজেলা সদর থেকে গুণভরি সড়কের পাবমারী সেতুটি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়। এতে উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় ফুলছড়ি উপজেলা সদরের সঙ্গে কয়েকটি এলাকার যানবাহন চলাচল।
পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে বন্যায় বিধ্বস্ত সেতুটি পুনর্নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাবমারী সেতুর স্থানে বাঁশের একটি সাঁকো নির্মাণ করে জনসাধারণ এবং হালকা যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন চলাচলে বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে পড়লে স্থানীয়রা কয়েক দফায় সংস্কার করে। বর্তমানে বাঁশের সাঁকোটি আবারও নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া কৃষিপণ্য আনা–নেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ধানের ব্যবসায়ীরা পরিবহনের অসুবিধার কারণে সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধান কিনতে অনীহা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় পূর্ব ছালুয়া গ্রামের মিলু আহমেদসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সেতুটি তিন বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে, নির্মাণের উদ্যোগ নেই। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি কয়েকবার মেরামত করা হয়েছে, কিন্তু দুর্ভোগ কমছে না। সম্প্রতি মোটরসাইকেলের এক চালকসহ বহু পথচারী বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে কখন যে কার মৃত্যু হয় বলা যাচ্ছে না। কবে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি আসবে সেটাও কেউ বলতে পারছেন না। তাঁরা সেতুটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানান।
পূর্ব ছালুয়া পুরোনো জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সাদা মিয়া বলেন, নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে মুসল্লিদের মসজিদে যেতে খুবই অসুবিধা হয়। বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠরা সাঁকোর ওপর দিয়ে যেতে পারেন না। তিনি সেতুটি দ্রুত নির্মাণের আবেদন জানান।
ফুলছড়ি উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মাহমুদ রোজী জানান, জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বন্যায় ধসে যাওয়া সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন মিললেই সেতু পুনর্নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।