সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের নিতান্ত সাধারণ এক গৃহবধূ রহিমা খন্দকার ববিতা। গৃহশয্যা সামগ্রী তৈরি এবং বাজারজাত করে রহিমা নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন, আয়ের পথ দেখিয়েছেন আরও অন্তত ৩০টি পরিবারকে। ববিতার অধীনে কাজ করেন ৪০ জনের বেশি কর্মচারী। গত শনিবার জয়িতা ফাউন্ডেশনের দশ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে এসে নিজের গল্প শোনালেন এই ববিতা। জানালেন, কারও ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকাটা তাঁর পছন্দ না। তাই ২০০১ সালে নিজ বাড়ির আঙিনায় বসেই শুরু করেন চাদর, কুশন ও পর্দা বানানোর কাজ। তখন যারা টিপ্পনি কেটেছিলেন, এখন তারাই ববিতার কাছে আসে কাজের খোঁজে।
ববিতার মতো আরেক সফল উদ্যোক্তা রাহেলা জাকির। টাঙ্গাইলের এই নারী ১৯৯২ সালে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে নিজ বাড়ির উঠানে বসে শুরু করেছিলেন বুটিক-বাটিকের কাজ। এখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। তাঁর উৎপাদিত তাঁতপণ্যের চাহিদা এখন সারা দেশে।
১০ বছরপূর্তি উপলক্ষে জয়িতা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্য নিয়ে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজন করা হয়েছে দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনী। সেখানেই মিলল ববিতা, রাহেলার মতো সারা দেশ থেকে আসা আরও অনেক নারী উদ্যোক্তার দেখা।
গতকাল ছিল এ আয়োজনের উদ্বোধনী পর্ব। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, প্রাচীনকালে যেমন বাঙালিদের উৎপাদিত পোশাকের জনপ্রিয়তা ছিল, তেমনি বর্তমানেও বাংলাদেশে তৈরি পোশাক বিশ্ব জয় করছে। ব্র্যান্ড হিসেবে জয়িতার সুনামও ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে। আস্থা ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হিসেবে জয়িতা সবার হৃদয়ে স্থান পাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সিনিয়র সচিব সাহিন আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আসা নারী উদ্যোক্তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। এ সময় আলপনাচিত্রের স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষাংশে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আজ বেলা তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার উন্মুক্ত থাকবে।