গাইবান্ধা সদর ও সাঘাটায় স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবে প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি সেতুর কাজ আংশিক হওয়ার পর ৮ মাস ধরে বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাকি দুটির কাজ শুরুই করেনি। যদিও এসব নির্মাণকাজ চলতি বছরের ১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ফলে এলাকাবাসীর ভোগান্তি আর শেষ হচ্ছে না।
সদর উপজেলার আলাই নদে পুলবন্দী সেতুর কাজ মাঝপথে আটকে আছে। ফলে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাশের পুরোনো পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে চলাচল করছে। অন্যদিকে সাঘাটা উপজেলায় বাঙ্গালী নদীর ওপর জুমারবাড়ী ইউনিয়নের বাজিতনগর সেতু ও কামালেরপাড়ার হাপানিয়া কালিতলা সেতুর কাজ এখনো শুরু হয়নি।
পুলবন্দী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. রবিন মিয়া জানান, নতুন সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো মুহূর্তে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সেতু তিনটি নির্মাণে ২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। হাসান টেকনো বিল্ডার্স ও আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে কাজটি পান ঠিকাদার মতলুবর রহমান। কাজ উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালের ১ অক্টোবর। চুক্তি অনুযায়ী তা ২০২৪ সালের ১ মার্চ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সেতু তিনটির কাজ চলমান দেখিয়ে মোট বরাদ্দ থেকে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পুলবন্দী সেতুর কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ বিল পরিশোধ হয়েছে। সওজের হিসাবরক্ষক আশিফ ইকবাল টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। অভিযোগ রয়েছে, কাজের অতিরিক্ত টাকা পেয়ে যাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন সেতু তিনটির কাজ নিয়ে টালবাহানা করছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাজের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন গাইবান্ধা সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিন ফারুক ও আসাদুল ইসলাম। পুলবন্দী সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আগেই ৭০ শতাংশ বিল দিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই কাজের প্রথম বিল ২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার দিয়েছি। যেটুকু কাজ হয়েছে, প্রথম বিলে তার চেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। তবে দ্বিতীয় বিলের প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ শাহিন ফারুক স্যার দিয়েছেন। কাজ না করেই স্যার কেন বিল দিয়েছেন, সে বিষয়ে তো আমি বলতে পারব না।’
যোগাযোগ করা হলে উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিন বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে কাজের বিষয়ে কথা বলা ওপর থেকে নিষেধ আছে। আমি কিছু বলতে পারব না।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হায়দার কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি মাত্র ১৮ দিন হলো এ অফিসে জয়েন করছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে হবে।’