বোরোর উৎপাদন বাড়াতে চাঁদপুরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক, বীজ সরবরাহ কেন্দ্র ও চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নতফলনশীল এ-৩ জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকেন চাঁদপুরের কৃষকেরা। জেলার ৮ উপজেলায় চলতি অর্থবছরে ইরি-বোরো চাষাবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৪৫ মেট্রিক টন।
এককভাবে হেক্টরপ্রতি ৪১০ মেট্রিক টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। হাইব্রিড ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর চাষাবাদ এবং হেক্টরপ্রতি ৪৯৫ মেট্রিক টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৮৪৫ মেট্রিক টন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার এম এস মো. ইয়াহিয়ার তথ্যমতে, চাঁদপুর সদর লালদিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ও চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ হাজীগঞ্জ টোরাগড়ের আওতায় এবার ২ হাজার ৮৫২টি ছোট-বড় সেচ সংযোগ দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আওতায় ৫৭০টি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর আওতায় ২ হাজার ২৭২টি সেচের বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
এম এস মো. ইয়াহিয়া জানান, বোরো চাষাবাদের সুবিধার্থে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২-এর আওতাধীন সরকারি ও পিবিএস থেকে কৃষকদের সব ধরনের ট্রান্সফরমার বিনা মূল্যে সংযোগকরণ ও মেরামত করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
পিক আওয়ারে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সীমিত আকারে গভীর, অগভীর, লো-লাইট আকারের সেচগুলো চালানো এবং সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তিন মাস নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত রয়েছে। জেলার সব উপজেলায় সমানতালে বোরো উৎপাদনে যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য ২৪ ঘণ্টা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আওতাধীন সেচগুলো মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষকদের সার্বিক দিক বিবেচনায় এনে ২০ শতাংশ ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক বিল কর্তন বা রিভেট করে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত রয়েছে। কোনো কৃষক চাইলে সৌরবিদ্যুচ্চালিত পাম্পের সংযোগ স্থাপনে পিবিএস সব ধরনের সার্ভিস দেবে।
সহকারী জেনারেল ম্যানেজার এম এস মো. ইয়াহিয়া আরও বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দেশের উৎপাদন বেড়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চাল রপ্তানি হচ্ছে। দেশের খাদ্য উৎপাদনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সারা দেশে এবার সেচ পরিচালিত হওয়া ৪ লাখ ৩৮ হাজারের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরই ৪ লাখ ২৮ হাজার। পিবিএসের কর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করছেন।
এ ছাড়া ৮ উপজেলায় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকার এ বছরও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় কম-বেশি হারে সার, বীজ ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি রয়েছে।