চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে কৃষি জমিতে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রায় ১ হাজার একর বোরো ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ধানের চারা রোপণের পর এক মাস অতিবাহিত হলেও খেতে পানি দিতে পারছেন না কৃষকেরা।
একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের জন্য খালে বাঁধ দিয়ে রাখায় সেচ সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বাঁধ অপসারণ করে খালে পানি চলাচলের উপযোগী করতে কৃষি বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কৃষকেরা। ঘটনাটি উপজেলার ১৫ নম্বর রূপসা উত্তর ইউনিয়নে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের বদরপুর, ভাটেরহৃদ ও রুস্তুমপুর এবং ১৬ নম্বর রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমুঘুয়সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার একর ধানের জমি পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। চারা রোপণের পর এক মাস অতিবাহিত হলেও খেতে পানি দিতে পারছে না কৃষকেরা।
জুয়েল হোসেন, ইয়াছিন, দেলোয়ার, বাচ্চু মিজি, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ২১ মার্চ সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে তাদের সমস্যা তুলে ধরে লিখিত আবেদন করেন।
কৃষক জুয়েল হোসেন বলেন, বারপাইকা মিজি বাড়ি সংলগ্ন ইরিগেশন খালে কালভার্ট নির্মাণকাজ চলমান থাকার কারণে খালে বাঁধ দিয়ে পানি বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে তারা কৃষি জমিতে পানি পাচ্ছে না। কৃষি জমি পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। কৃষি জমির দিকে তাকিয়ে এক মাস কালভার্টের কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করে তারা লিখিত আবেদন করেন। একই দাবি চরমুঘুয়া এলাকার কৃষকদের।
১৫ নম্বর রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাউছার আলম কামরুল বলেন, ‘কৃষকদের ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ১০০ ফুট পাইপ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করি। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ‘কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রিফাত জামিল বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চিঠি পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
ফরিদগঞ্জ প্রকৌশলী বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউনুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। কৃষকদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিউলি হরি বলেন, ‘ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। কৃষকের ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’