গৌরীপুরে জমিদার আমলের নিদর্শন শতবর্ষী গোলপুকুরের সৌন্দর্য দিন দিন ম্লান হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। তলদেশে গজিয়েছে ঘাস। স্থানীয় বাসিন্দারা ঐতিহাসিক এ নিদর্শনটিকে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের ভেতর গোলপুকুরের অবস্থান। শত বছর আগে গৌরীপুরের তৎকালীন জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী জমিদারবাড়ির নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সাগরদীঘির পূর্ব পাশে পাকা শানবাঁধানো ঘাটযুক্ত গোলপুকুর নির্মাণ করেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর গোলপুকুরটি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থেকে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল।
২০০৭ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এহসানুল হক গোলপুকুরটি সংস্কার করেন। এ সময় পুকুরের শানবাঁধানো ঘাটের সিঁড়ি সংস্কার করে সুন্দর পানির ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়। পানি ধরে রাখা ও বের হয়ে যাওয়ার
ব্যবস্থা করা হয়। আলোকসজ্জার পাশাপাশি গোলপুকুরের চারপাশে লাগানো হয় দূর্বা ঘাস ও হরেক রকম ফুলের চারা। পুকুরটির শ্রী বৃদ্ধির জন্য রোপণ করা হয়েছিল বিভিন্ন রকম দেশি-বিদেশি গাছ। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য ইট দিয়ে ঘাটের আদলে বেঞ্চ স্থাপন করা হয়। কিন্তু সংস্কারের নতুনত্ব কাটতে না কাটতেই কয়েক বছরের মাথায় গোলপুকুর আকর্ষণ হারাতে শুরু করে।
গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘২০০৭ সালে সংস্কারের পর গোলপুকুরটি তাঁর যৌবন ফিরে পায়। দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংরক্ষণের আর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, গোলপুকুরে পানি নেই। পুকুরের তলদেশে আগাছা ও দূর্বা ঘাসের সবুজ চাদর। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। বৃষ্টি হলে তা জমে ছড়ায় দুর্গন্ধ। পুকুরের সিঁড়ির রং উঠে যাচ্ছে, খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফুলের গাছগুলোও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, গোলপুকুরটি সংস্কার করে যুগোপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।