সামাজিক জীবন সুখময় ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ইসলাম কিছু নীতি ও শিষ্টাচার শিখিয়েছে, যা মেনে চললে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি ও ভালোবাসা নেমে আসবে। আমাদের পারস্পরিক বন্ধন হয়ে উঠবে অনেক শক্তিশালী ও আন্তরিক। এক হাদিসে মুসলিমদের প্রতি পারস্পরিক পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকারের কথা আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘একজন মুসলিমের প্রতি তার অপর ভাইয়ের পাঁচটি অধিকার রয়েছে। এক. সালাম দিলে সালামের উত্তর দেওয়া। দুই. অসুস্থ হলে তার দেখাশোনা করা। তিন. মারা গেলে তার জানাজায় অংশ নেওয়া। চার. দাওয়াত দিলে দাওয়াতে হাজির হওয়া। পাঁচ. হাঁচি দিয়ে দোয়া পড়লে তার উত্তর দেওয়া। (সহিহ বুখারি: ১২৪০) আরেকটি হাদিসে এই পাঁচটির সঙ্গে আরও একটি অধিকারের কথা যুক্ত করা হয়েছে। সেটি হলো, কোনো মুসলিম ভাই যদি অপর ভাইয়ের কাছে উপদেশ-পরামর্শ চায়, তাহলে তাকে সুপরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা। (ফাতহুল বারি)
সালাম আগে দেওয়া বেশি উত্তম। আগে সালাম দেওয়া বিনয়ের নিদর্শন। অহংকার থেকে মুক্তি পেতে এটি একটি চমৎকার ওষুধ। পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া উচিত। পরিচিত কেউ হলে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। সালাম দেওয়া সুন্নত। সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। তবে উত্তরদাতা বিশেষ কোনো কাজে ব্যস্ত থাকলে এবং উত্তর দেওয়া সম্ভব না হলে উত্তর না দিলেও অসুবিধা নেই।
জানাজা ও রোগীর দেখাশোনা করা ফরজে কেফায়া। সমাজের কিছু লোক শরিক হলে সবার পক্ষ থেকে এ দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। তবে যদি কেউ এ দায়িত্ব আঞ্জাম না দেয়, তবে সবাই গুনাহগার হবে। হাঁচি দিলে হাঁচিদাতার জন্য সুন্নত হলো আলহামদুলিল্লাহ বলা। যিনি আলহামদুলিল্লাহ শুনবেন তিনি উত্তরে বলবেন ইয়ারহামুকাল্লাহ। অর্থাৎ আল্লাহ তোমার ওপর দয়া করুন।
আসুন, এই গুরুত্বপূর্ণ অথচ অবহেলিত সুন্নতগুলোর ব্যাপারে যত্নবান হই।
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক