মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। আর এটি তখনই পূর্ণতা পায়, যখন একটি ঘর বানিয়ে তাতে ওঠা যায়। মানুষ নিজের ঘরে বাস করে যে নিরাপত্তা লাভ করে, অন্য কোথাও সে এমন নিরাপত্তা পায় না। এটি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় নেয়ামত। নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা করা মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা মহানবী (সা.) যখনই কোনো নিয়ামত লাভ করতেন, তখনই আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করতেন এবং কোনো আনন্দের সংবাদ পেলে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। তাই দুই রাকাত সালাত আদায় করে নতুন ঘরে ওঠাই উত্তম।
নামাজের পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াত করে ঘরে উঠলে দুষ্ট জিন ও শয়তানের উপদ্রব থেকে মুক্ত থাকা যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কবরস্থান বানাবে না। নিশ্চয়ই শয়তান এমন ঘর থেকে পালিয়ে যায়, যেখানে সুরা বাকারা পাঠ করা হয়।’ (মুসলিম)
ঘরে কোনো প্রাণী বা জীবজন্তুর ছবি রাখা শরিয়তসম্মত নয়। এতে বাড়িঘর রহমতশূন্য হয়ে যায়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতাগণ এমন ঘরে প্রবেশ করে না, যেখানে প্রাণীর ছবি বা প্রতিকৃতি রয়েছে।’ (মুসলিম)। সাহাবিগণ বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরে ছবি রাখতে ও ছবি অঙ্কন করতে নিষেধ করেছেন।’ (তিরমিজি)
আমাদের সমাজে দেখা যায়, নতুন ঘরে ওঠার আগে ধুমধাম করে মিলাদ মাহফিল করে মাওলানার মাধ্যমে দোয়া করানো হয়। অনেকে ভাবেন, এ ছাড়া ঘরে উঠলে অনেক বালা-মসিবত আসতে পারে। তবে ইসলামি শরিয়তে এরূপ ভাবনার কোনো ভিত্তি নেই। সুতরাং নতুন ঘরে ওঠার আনন্দে আনন্দিত হয়ে শরিয়তবহির্ভূত কোনো কাজ করা মুমিনের পরিচায়ক নয়।
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়