নিয়মিত যত্ন নিলে একটি ল্যাপটপ অনেক বছর ব্যবহার করা যায়। তবে শুধু ল্যাপটপের বাইরের অংশের যত্ন নিলে হবে না, ভেতরের জঞ্জালও পরিষ্কার করতে হবে। বেশ কিছু নিয়মও মানতে হবে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন আনিকা জীনাত।
অপ্রয়োজনীয় ফাইল
ফাইল, ছবি ও সিনেমা দিয়ে ফোল্ডার ভরে রাখবেন না। অপ্রয়োজনে জমা করলে, সেগুলো ল্যাপটপের গতি কমিয়ে দেবে। ডাউনলোড ফোল্ডারের ফাইল নিয়মিত ডিলিট করুন। ডেস্কটপেও ফাইলের সংখ্যা কমিয়ে ফেলুন। রিসাইকেল বিন পরিষ্কার রাখুন। ল্যাপটপ দ্রুত কাজ করবে।
ক্যাশ ও কুকি পরিষ্কার করুন
শুধু ইন্টারনেট ব্রাউজ করলেও ক্যাশ ও কুকি জমে যায়। এগুলো ডিলিট করতে প্রথমে ক্রোম ব্রাউজার চালু করুন। ডান দিকে থাকা থ্রি ডট আইকনে ক্লিক করুন। সেটিংস থেকে অ্যাডভান্সড অপশনে ক্লিক করে স্ক্রল করতে থাকুন। ‘ক্লিয়ার ব্রাউজিং ডেটা’য় ক্লিক করে কুকিজ, ক্যাশ ও ব্রাউজিং হিস্ট্রি ডিলিট করা যাবে।
স্লিপ মুড
ল্যাপটপ সব সময় অন রাখা উচিত নয়। স্লিপ মুডে থাকলে অযথাই ব্যাটারি খরচ হয়। যন্ত্রেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই নিয়মিত শাটডাউন করুন। এ তো গেল ভেতরের অংশের যত্ন। ল্যাপটপের বাইরের অংশ পরিষ্কার রাখতে চাইলে আরও কয়েকটি কাজ করতে হবে।
ল্যাপটপ পরিষ্কারে
ল্যাপটপের বাইরের অংশ পরিষ্কারের জন্য একটি বাটিতে পানি নিন। কয়েক ফোঁটা তরল ডিশওয়াশার মিশিয়ে ফেনা তৈরি করুন। পাতলা সুতির কাপড় ভিজিয়ে ল্যাপটপের ওপরের দিকের অংশ মুছে নিন। এরপর স্ক্রিন পরিষ্কারের আগে ও পরে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
এ ছাড়া স্ক্রিন পরিষ্কারে কিনে নিতে পারেন প্রি-ময়েশটেন্ড স্ক্রিন ওয়াইপ। এতে নিরাপদ মাত্রায় আর্দ্রতা থাকে বলে স্ক্রিনের ক্ষতি হয় না।
আগে ল্যাপটপ উল্টো করে ঝেড়ে নিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ধুলা ঝেড়ে নিন। কিবোর্ডে কোনোভাবেই পানি লাগানো যাবে না। তাই পানি ও সাবানের মিশ্রণের বদলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিন। এতে কটন বাড ভিজিয়ে প্রতিটি বাটনের চারপাশ ঘষে নিন। এ প্রক্রিয়ায় সময় বেশি লাগে। সহজে পরিষ্কার করতে চাইলে একটি কম্প্রেসড এয়ার ডাস্টার কিনে নিতে পারেন। দেশের বাজারে এটি ৫ হাজার টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন।
ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন
ল্যাপটপের ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন পরিষ্কার করতে লেন্স ক্লিনার ব্যবহার করুন। খুব নরম পাতলা কাপড়ে লেন্স ক্লিনার লাগিয়ে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন পরিষ্কার করে নিন।
ল্যাপটপের আয়ু
একটি ল্যাপটপের আয়ু তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অতিরিক্ত যত্ন নিলে এর আয়ু হতে পারে সাত বছর। তবে এত বছর ল্যাপটপ চালাতে হলে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
ল্যাপটপের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হলে র্যামের শক্তি বাড়াতে হবে। স্টোরেজ বাড়াতে যুক্ত করতে হবে এসএসডি কার্ড। ঘন ঘন ব্যাটারির চার্জ ফুরালে ব্যাটারি বদলাতে হবে।
ল্যাপটপ শক্তিশালী হলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। প্রতিদিন ল্যাপটপে কী ধরনের কাজ করছেন, সেটাও আয়ু নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে। যেমন ই–মেইল চালাচালি, ভিডিও দেখা, ব্রাউজিং ও সিনেমা দেখার মতো হালকা কাজ করলে ল্যাপটপ দীর্ঘস্থায়ী হবে।
মাঝারি দামের ল্যাপটপ সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত সচল থাকে।
গেমিং ল্যাপটপের ক্ষেত্রে আয়ু একটু কম হয়। কারণ প্রতিনিয়তই নতুন প্রযুক্তির গেম বাজারে আসে। তাই ল্যাপটপ একটু পুরোনো হলেই নতুন গেম চালানো কষ্টকর হয়ে যায়, নিরবচ্ছিন্নভাবে খেলা যায় না। তাই শক্তিশালী গ্রাফিকস কার্ড সংযুক্ত ল্যাপটপ কেনা ভালো। ল্যাপটপ ব্যবহারে সতর্কতা:
সূত্র: সিনেট ও অন্যান্য