নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বেড়েই চলেছে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশে ঘটছে এসব ছিনতাই। এ সড়কে ছিনতাইকালে চালককে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনাও ঘটেছে।
জানা যায়, সড়কের কিছু অংশে নেই পর্যাপ্ত সড়কবাতি এবং পুলিশের টহল; ফলে অন্ধকার স্থানেই সবচেয়ে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তা ছাড়া শুধু অটোরিকশা নয়, এই রাস্তা দিয়ে কেউ একা গেলে তাকেও পড়তে হয় ছিনতাইকারীর কবলে। বিভিন্ন সময় ছিনতাইকারীরা ধরা পড়ে এলাকাবাসীর হাতে, কিন্তু পুলিশের ঝামেলায় না জড়াতে পিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা সড়কের অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্সের উল্টো পাশে নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তায় একজন অটোরিকশাচালক ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। প্রথমে ছিনতাইকারীরা ভয়ভীতি দেখালেও চালক রিকশা ছাড়েননি, পরে ছিনতাইকারী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাঁর আঙুলে, দুই হাতে, পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। তাঁর চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান অটোরিকশাচালক। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এলাকাবাসী ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশে না দিয়ে পিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্ধকার থেকে একজনের চিৎকারের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন তাঁরা। শব্দ শুনে এলাকাবাসীসহ সবাই মিলে এগিয়ে এলে দেখেন, কম বয়সী একজন ছেলে এক লোককে মেরে রক্তাক্ত করে ফেলেছে। তাঁরা দুজনকেই আটক করে। পরে জানতে পারেন, একজন রিকশাচালক, আরেকজন ছিনতাইকারী। তখন ছিনতাইকারীকে পিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেন, আর চালককে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক চা-দোকানি জানান, এখানে প্রায় সময় এ রকম ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এখন একটু কমছে। ঈদের আগে এক দিন পর পর ছিনতাই হতো।
এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করতে চিহ্নিত স্পটগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হোক। এতে ছিনতাইকারী শনাক্ত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া সহজ হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাজালাল বাদলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘রোববার রাতের ঘটনায় এখানো থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কিছু স্থান থেকে একাধিক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। চিহ্নিত কিছু স্থানে আমাদের টহল দল সব সময় অবস্থান করে। সবার স্বাধীন চলাফেরায় নিরাপত্তা দিতে পুলিশ জোরালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ছিনতাই রোধে মাঝে মাঝে বিশেষ অভিযানও চালানো হয়।’