খানাখন্দে ভরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-অরুয়াইল সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার সড়কের তিন কিলোমিটার অংশ এতই বিপর্যস্ত যে, সেখান দিয়ে হেঁটে চলাও কঠিন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলছে যানবাহন। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সড়কটি দিয়ে জেলার সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলার হাওরাঞ্চলের অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। এই সড়ক ছাড়া তাঁদের উপজেলা ও জেলা শহরে যাওয়ার আর কোনো মাধ্যম নেই। ফলে ব্যস্ততম এই সড়কের ভাঙা জায়গায় একপাশ থেকে গাড়ি আসলে বিপরীত পাশের গাড়িকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে প্রায়ই যানজট লেগে যায়। এক ঘণ্টার পথে ব্যয় হয় দু-তিন ঘণ্টাও।
আলফা মিয়া (৬০) নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সরাইল গেছিলাম। দ্যাহেন, গাড়ি থাইক্ক্যা নাইম্যা গেলাম জানের ডরে। কোন সময় সিএনজি উল্ডাইয়া পইড়া মরি! এইডা অহন আর রাস্তা না, মরণের ফান্দ।’
এই সড়কের ভুইশ্বর এলাকা থেকে চুন্টা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে দেখা যায়, বড় বড় খানাখন্দ। এখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই গর্তে আটকে যায় উল্টে যায় রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মালবাহী কাভার্ডভ্যান। এই সড়ক সংস্কারের দাবিতে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করেছে এলাকার বাসিন্দারা। বারবার সংস্কারের আশ্বাসও দিয়েছে জনপ্রতিনিধিরা। তবে তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ‘আশ্বাসের ভরসা’ নিয়েই দিন পার করছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
ওই পথে নিয়মিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান আক্তার হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। দুদিন পরপর গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিনের দুর্ঘটনার কথা আর নাই বা বললাম।’ তবে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাড়ি উল্টে পড়ে বলেও জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাংসদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। মানুষকে আর কষ্ট করতে হবে না।’
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী নিলুফার ইয়াছমিন জানান, সড়কটির সংস্কার কাজের জন্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু হবে।