মৌলভীবাজারের চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের কারণ পূর্ব শত্রুতা, নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার এবং ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব।
ভিডিও ভাইরাল হওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার অন্যতম আসামি বাবরসহ আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গতকাল। গতকাল সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে তিনজন ও সিলেট থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন, আব্দুল আহাদ নাইছের দুই ছেলে বাবর মিয়া (২৮) ও রাসেল মিয়া (৩২) এবং মাসুদ মিয়া (৪২) ও মরদিছ মিয়া (৬৮)। এর আগে গত মঙ্গলবার হত্যা মামলার আসামি আমির হোসেন ওরফে হীরা (৪০) ও জুয়েল মিয়া (৩৫) এবং গত বুধবার প্রধান আসামি তোফাজ্জল আলী (৩৫) ও খালেদ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা।
খন্দকার আল মঈন জানান, ঘটনার পর পরই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এতে জানা যায়, নাজমুল হাসানের লোকজন হামলা চালিয়ে আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার ছেলে জুয়েলের পা ভেঙে দিয়েছিল। এই হামলার প্রতিশোধ নিতে জুয়েলের চার ভাই নাজমুলের প্রতিপক্ষের সঙ্গে মিলে খুনের পরিকল্পনা করে। এ ছাড়াও মামলার এক নম্বর আসামি তোফাজ্জলের শ্বশুরের সঙ্গে নাজমুলের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। এমনকি আসামিদের সঙ্গে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল তাঁর। এসব কারণে আসামিরা এক হয়ে নাজমুলের ওপর হামলা চালায়। আর এই হত্যাকাণ্ডের মূল নেতৃত্বে ছিলেন তোফায়েল।
হত্যাকাণ্ডের দিন নাজমুল হাসান চৈত্রঘাট বাজার থেকে বাসায় যাওয়ার পথে আসামিরা মাইক্রোবাস থেকে নেমে রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টায় তাঁর মৃত্যু হয়।