ঘাটাইলে বিদ্যালয় খোলার পর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে তিন হাজার শিক্ষার্থী ফিরে আসেনি। প্রায় দেড় মাস ধরে বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরু হলেও এসব শিক্ষার্থী এখনো ক্লাসে ফেরেনি। এসব শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ছাত্রী। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, এসব ছাত্রীর অনেকেই বাল্যবিবাহের শিকার। এসব শিক্ষার্থীর ক্লাসে ফেরানোর জন্য আলোচনা চলছে বলে জানালেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ঘাটাইল উপজেলায় ৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩২টি মাদ্রাসা আছে। করোনা মহামারির আগে এ ৯৩টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার। এদের মধ্যে ২ হাজার ৬০৮ জন শিক্ষার্থী এখনো ক্লাসে ফেরেনি। এ ছাড়া ১৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মোট অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪১৯।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লাসে না আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছাত্রী। এসব ছাত্রী বাল্যবিবাহের কারণে বিদ্যালয় ছেড়েছে। আর ছাত্ররা অভাব-অনটনের কারণে কাজে যুক্ত হয়েছে। এদের কেউ কেউ পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করছে। আবার অনেকে কাজ নিয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
ঘাটাইল সদরে অবস্থিত এসই বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুলি বেগম বলেন, দীর্ঘ সময় পড়াশোনা থেকে ছাত্রীরা বিচ্ছিন্ন ছিল। ঘরে বসে থাকায় দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীরা বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। তবে বিবাহ হওয়ার পরেও অনেক মেয়ে বিদ্যালয়ে আসছে। আবার অনেক মেয়ের পড়াশোনা আর্থিক অনটনের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মাধ্যমিকের অনেক শিক্ষার্থী এখনো ক্লাসে ফেরেনি। এদের ক্লাসে ফেরানোর বিষয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ক্লাসে না ফেরা শিক্ষার্থীদের কীভাবে ক্লাসে ফেরানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।