সম্পদ থাকা সত্ত্বেও চাহিদানুযায়ী ব্যয় না করাকে কৃপণতা বলে। এটি একটি নিকৃষ্ট স্বভাব, যা ব্যক্তিকে তুচ্ছ করে। কৃপণতার কারণে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয় এবং কৃপণকে কেউ ভালো চোখে দেখে না। কৃপণতা করে সম্পদ জমা করলেও এর মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ থেকে তাদের যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে, তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮০) মহানবী (সা.) বলেন, ‘কৃপণ ব্যক্তি আল্লাহ থেকে দূরে, জান্নাত থেকে দূরে এবং মানুষ থেকে দূরে থাকে, কিন্তু সে জাহান্নামের নিকটবর্তী থাকবে।’ (তিরমিজি)
তবে হিসাবি হয়ে মধ্যম পন্থায় চলার নাম কৃপণতা নয়; এটি প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু সম্পদ ও চাহিদা উভয়টি থাকার পরও খরচ না করলে ব্যক্তি নিন্দনীয় হয়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘প্রতারক, কৃপণ ও দানের খোঁটা দানকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (তিরমিজি) অপরদিকে কৃপণতা কোনো মুমিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। কারণ মুমিন ব্যক্তি সর্বদা উদার, মহৎ ও দানশীল হয়ে থাকে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘কৃপণতা ও মন্দ স্বভাব মুমিনের মধ্যে একত্র হতে পারে না।’ (তিরমিজি)
আমরা আমাদের নবী (সা.)-এর জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই যে, তিনি কখনো কৃপণতা করেননি। তিনি সাধ্যানুসারে খরচ করতেন এবং কৃপণতাকে ঘৃণা করতেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা কৃপণতা থেকে দূরে থাকো। কেননা, কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে।’ (মিশকাত)
কৃপণতার ন্যায় মন্দ স্বভাব সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য ও ঘৃণিত। এটি থেকে বেঁচে থাকা আমাদের একান্ত প্রয়োজন।
ড. এ. এন. এম. মাসউদুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়