শিশুরা মাঝেমধ্যেই অনাকাঙ্ক্ষিত বা অযাচিত আচরণ করতে পারে। সংশোধনের নামে আমরা এমন কিছু আচরণ করি, যা শিশুর জীবনে বিপর্যয় নিয়ে আসে। আমরা মনে করি, শিশুর ভালোর জন্য করছি। অথচ এই আচরণগুলো যে ভুল, তা আমরা নিজেরাই জানি না।
- অতি আদর বা অতি শাসনে শিশুকে লালন করবেন না। আদর ও শাসনের সুন্দর সমন্বয় রাখুন।
- শাসন করার আগে, কেন শাসন করা হচ্ছে তা শিশুকে জানাতে হবে। প্রতিবারই এ কাজটি করতে হবে।
- শাসনের নামে শিশুকে শারীরিকভাবে আঘাত করবেন না। শারীরিক আঘাত বা মারধর শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে এবং সমস্যাগুলোকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
- শাসনের নামে শিশুর সঙ্গে জোরজবরদস্তি করবেন না। জবরদস্তি করলে তারাও বড় হয়ে অন্যের সঙ্গে জবরদস্তি করবে।
- শাস্তি মানে প্রহার বা বকাবকি করা নয়। শিশু ভুল করলে তা তাকে ধরিয়ে দিন, কিছুক্ষণের জন্য গম্ভীর হয়ে যান, প্রয়োজনে স্থান ত্যাগ করুন অথবা বিশেষ কিছু সুবিধা (যেমন খেলনা, খাবার ইত্যাদি) কমিয়ে দিন।
- শিশু ভুল করলে সবার সামনে সমালোচনা করবেন না। যদি বলতে হয়, তবে একান্তে আড়ালে ডেকে বলুন। যখন মানসিকভাবে প্রশান্ত বা স্থির থাকে, তখন বলুন।
- শিশুকে গালি দেবেন না বা নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না। কারণ তা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। শিশুর অবচেতন মনে এ ধরনের মন্তব্য গেঁথে যায়। একসময় দেখা যায় শিশু এ তথ্য দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে।
- শিশুকে কোনো কিছুর ভয় দেখিয়ে সংশোধন করতে যাবেন না। এ ধরনের আচরণ শিশুর মধ্যে স্থায়ী ভীতিবোধ জাগিয়ে তুলতে পারে।
- মা-বাবা বা পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে সন্তানকে শাসন করবেন না। একজন শাসন করলে, অন্যরা চুপ থাকবেন।
- শাসন বা আদেশ, উভয় ক্ষেত্রেই মা ও বাবা দুজনের অবস্থান এক হতে হবে। নির্দেশনা দুই রকম হলে শিশু বিভ্রান্ত হয়। কোনটি পালন করবে, তা বুঝে উঠতে পারে না।
শ্যামল আতিক, প্যারেন্টিং গবেষক ও কাউন্সেলর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন