চলতি মৌসুমে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকের ঘুম নেই। শ্রমিক-সংকটে মাঠের পাকা ধান নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁদের। উপজেলায় এবার মোট বোরো চাষ হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর। এদিকে ধান কাটতে শ্রমিকের অভাবে অনেকে হারভেস্টার মেশিনের সহযোগিতা নিলেও পুরো উপজেলায় এই যন্ত্র আছে মাত্র ৩টি।
বছরের এ সময়ে বাঁশখালী, মহেশখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ, উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক চন্দনাইশে আসেন। কিন্তু তাঁরা এখনো আসেননি। তাঁরা সহনীয় মজুরিতে ধান কেটে ঘরে তুলে দিতেন। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষিশ্রমিকও মিলছে না। সময়মতো পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে কৃষকের ধানে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
এদিকে উপজেলার চন্দনাইশ ও দোহাজারী পৌরসভা, কাঞ্চনাবাদ, জোয়ারা, বরকল, বরমা, বৈলতলী, সাতবাড়িয়া, হাশিমপুর, ধোপাছড়ি, ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের বীজ রোপণের পর থেকে অনুকূল পরিবেশ থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।
ছলিয়ার পাড়ার কৃষক মাহবুবুল আলম জানান, ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। এক সপ্তাহ ধরে শ্রমিক ও ধান কাটার মেশিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। বৃষ্টির আশঙ্কা দেখে খুব চিন্তিত ছিলেন। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা শুরু করেন। এতে খরচ অনেক কম।
সাতবাড়িয়া পলিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবদুর রশিদ জানান, জমির ধান পেকেছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারছেন না। শ্রমিক মিললেও মজুরি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
বৈলতলী এলাকার কৃষক নুরুল্লাহ বলেন, বোরো মৌসুমে ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে কাটতে হয়। কারণ পাকা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে বিলম্ব হলে বৃষ্টি ও কালবৈশাখীতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রাণী সরকার বলেছেন, উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টরে বোরো আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়ার প্রতিকূল অবস্থার আশঙ্কায় কৃষকদের ধান ৮০ ভাগ পাকলে কেটে ফেলার কথা বলা হয়েছে। সরকারিভাবে ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া ৩টি হারভেস্টার মেশিন ও জিপার মেশিন নিয়মিত ধান কাটলে শ্রমিক-সংকট অনেকটা লাঘব হবে বলে আশা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।