পরিবহন ধর্মঘটে যাত্রীরা অখুশি থাকলেও খুশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকেরা। যাত্রীদের চাপে তাঁদের আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাঁদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন মাহিন্দ্রা নামক থ্রি-হুইলার ও লেগুনার চালক ও মালিকেরা। ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাস ও ট্রাক বন্ধ থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও জামালপুরের মধ্যবর্তী স্থান মধুপুর জেলা শহরের মতোই ব্যস্ত। এই শহরের ওপর দিয়ে অন্তত ২৫টি রুটের যানবাহন চলাচল করে থাকে। মধুপুরের ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন।
ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। ব্যয় করতে হয় অতিরিক্ত অর্থ। এই সুযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, লেগুনাসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহনের মাধ্যমে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হয় যাত্রীদের।
সরেজমিনে গতকাল রোববার মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, মধুপুর বাসস্ট্যান্ড পুরোটাই অটোরিকশা ও মাহিন্দ্রার দখলে। তাঁরা যাত্রী নিয়ে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, ভালুকা, সখীপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল, ভূঞাপুর, চন্দ্রাসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। যাত্রীদের সঙ্গে চালকদের ভাড়া নিয়ে দর কষাকষি করতেও দেখা গেছে। প্রত্যেক যাত্রীকেই ৫০ থেকে ২০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়।
সিএনজিচালক ফরহাদ হোসেন আনন্দের সঙ্গে বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুইবার টাঙ্গাইল যাত্রী আনা-নেওয়া করেছি। আরও দুবার সিরিয়াল পাওয়া যাবে। রোজগার অন্য সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তিন হাজার টাকায় চন্দ্রা গেছি ও আসছি। এখন স্থানীয় দুয়েকটি টিপ দিলে খরচ বাদে হাজার পাঁচেক টাকা বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।
যাত্রী আব্দুল আজীজ বলেন, ‘আগে তিন শ টাকায় ভূঞাপুর গেছি। আজ আট শ টাকায় ভূঞাপুর থেকে ঘুরে এলাম।’
অপরদিকে জামালপুর থেকে সালাম মিয়া মধুপুর এসেছেন ১৫০ টাকা দিয়ে। তিনি বলেন, ‘মধুপুর থেকে এলেঙ্গা যাওয়ার জন্য ১০০ টাকা ভাড়া দেব বলেছি। সিএনজি চালকেরা আমাকে পাত্তাই দিল না। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে তিনি অনেকটা অখুশি ও ক্ষুব্ধ তিনি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানান, ভালুকা, ভরাডোবা, সখীপুর, ময়মনসিংহ, কেন্দুয়াসহ সব পথের ছোট ছোট পরিবহনগুলো ভাড়া বাড়িয়েছে। তাঁদের গাড়ি গ্যাসে চলে বলে যাত্রীদের সেবা দিতে পারছেন। ডিজেল বা কেরোসিনে হলে এই সেবা দেওয়া সম্ভব হতো না।
টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খালিকুজ্জামান লিটন বলেন, ডিজেল ও কেরোসিনের অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে সৃষ্টি হয়েছে যত ভোগান্তি। এই ভোগান্তি লাঘবে সকলের সমন্বিত সিদ্ধান্ত কাজে আসবে।