স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ থেকে ১৭টি নথি হারিয়েছে। বিষয়টি জানার পর গত বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে জানান, জিডিতে নথিগুলোর স্মারক নম্বর দেওয়ায় কী ধরনের কাগজপত্র হারিয়েছে, তা বলা যাচ্ছে না। তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের উপসচিব নাদিরা হায়দার বাদী হয়ে জিডি করেছেন। তিনি জিডিতে বলেছেন, ‘গত বুধবার অফিস সময়ে নথিগুলো কেবিনেটে রাখা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার দুপুরে খোঁজ করে সেগুলো পাওয়া যায়নি।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানো ও মোবাইলে সেগুলোর ছবি তোলার অভিযোগ তুলে গত ১৭ মে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আটক করে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। এরপর অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই মামলায় কয়েক দিন কারাগারে থাকার পর এখন জামিনে আছেন তিনি। এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়। এর মধ্যেও নথিগুলো গায়েব হলো কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
একজন কর্মকর্তা জানান, সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের নিচতলায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শাহাদৎ হোসাইনের কক্ষসংলগ্ন রুমে বসেন ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা-২-এর সাঁট মুদ্রাক্ষরিক আয়েশা সিদ্দিকা ও কম্পিউটার অপারেটর জোসেফ সরদার। হারিয়ে যাওয়া নথিগুলো তাঁদের কেবিনেটে ছিল।
শাহাদাৎ হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের পাঁচটি গাড়ি ক্রয়, মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের জন্য বরাদ্দ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরসহ কয়েকটি প্রকল্পের নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নকল চাবি দিয়ে তালা খোলা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা। নথি গায়েবের কারণ ও জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর আজকের পত্রিকাকে জানান, নথি গায়েবের ঘটনায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. শাহ্ আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে। সিআইডি সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।