শীতজনিত রোগের উপসর্গ নিয়ে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধদের ভিড় বেড়েছে। রোগীর চাপে হাসপাতালে শয্যা-সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক শিশু রোগীকে নিয়ে অভিভাবকেরা থাকছেন মেঝেতে।
গতকাল সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, শয্যা না পেয়ে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে বেশ কয়েকজন শিশু। তাদের সঙ্গে আছে অভিভাবকেরা। কেউ আছেন দুদিন ধরে, কেউ গতকালই এসেছেন।
সদর আধুনিক হাসপাতালে আসা জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘির আমিনুর ইসলাম বলেন, ‘ছেলে আহনাফের (১০ মাস) কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া হচ্ছে, দুদিন আগে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তাঁরা ভর্তি করাতে বলেন, তবে বেড নেই। এ জন্য মেঝেতে আছি
বাচ্চাকে নিয়ে।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গলেহা এলাকার নুরনেহার বলেন, ‘মেয়ে আফিয়ারের (২) পাতলা পায়খানা। গত রোববার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করাই। ডাক্তার দেখে স্যালাইন দিয়েছেন। কিছু ওষুধ কিনতে হয়েছে। এখনো অবস্থা ভালো হয়নি। ডাক্তার বলেছেন ধৈর্য ধরতে।’ সদর উপজেলার হাড়িভাষা ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর (৪৭) বলেন, ‘ঠান্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। হাসপাতালে দুদিন আগে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি।’
হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঠান্ডার কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের সর্দি, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালের বহির্বিভাগে তিন শ থেকে সাড়ে তিন শ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। রোববার রাত ১২টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডাজনিত রোগী আরও ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
সদর আধুনিক হাসপাতালে ইনডোরে দায়িত্বরত সহকারী সার্জন নিশাত আনজু বলেন, শয্যা-সংকটে বাধ্য হয়েই রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসার জন্য জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। রোগী বেশি আসায় কোনো কোনো দিন বিছানার চাদরও থাকে না। তবে সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ওষুধের সংকট নেই।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়ায় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাসেল শাহ জানান, গতকাল সকাল নয়টায় পঞ্চগড়ে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।