বিয়ানীবাজার উপজেলায় প্রচলিত এক ও দুই টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কেনাকাটা কিংবা যে কোনো লেনদেনের ক্ষেত্রে এই কয়েনগুলো কেউই নিতে চায় না। অথচ আইন অনুযায়ী বিনিময়ের সময় কাগজি নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সব মূল্যমানের কয়েন নিতে সবাই বাধ্য।
দেশে অনেক আগেই হারিয়ে গেছে ১,৫, ১০,২৫ ও ৫০ পয়সার কয়েন। তবে লেনদেনে পাঁচ টাকার কয়েনের ব্যবহার থাকলেও এক ও দুই টাকার কয়েন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। চার টাকা মূল্যের কোনো পণ্য কিনে পাঁচ টাকার কয়েন বা নোট দিলে দোকানিরা ভাংতি নেই বলে এক টাকা ফেরত দেন না। আবার অনেক সময় এক টাকার বদলে ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি চকলেট।
মজিদ লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী এনামুল মজিদ মাসুম বলছেন, পকেটে বা টাকা রাখার ব্যাগে কয়েন রাখতে সমস্যা হয় বলে মানুষের মধ্যে খুচরা পয়সা ব্যবহারের আগ্রহ কমেছে।
তিনি বলেন, ‘অনেক ব্যবসায়ী আবার দায়ী করছেন ব্যাংকগুলোকে। ব্যাংকগুলো কোনো কারণ ছাড়াই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কয়েন নিতে চায় না। কয়েনের বদলে কাগজের নোট ব্যবহারেই সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি। যদিও লেনদেনে এক ও দুই টাকার কয়েনের গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয়। এরপরও কয়েন নিতে আগ্রহ দেখাননা কেউ।’
ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন জানান, মুদির দোকান থেকে পণ্য কিনে এক ও দুই টাকার কয়েন দিলে দোকানি তা নিতে অস্বীকার করেন। দোকানির ভাষ্য, এসব কয়েন বিয়ানীবাজারে চলে না।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের জামান প্লাজার ব্যবসায়ী জাকারিয়া জানান, কয়েনের প্রচলন একেবারেই নেই। ফকিরও ভিক্ষা নিতে চায় না।
সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা মো. নজরুল হোসেন বলেন, ‘ব্যাংকগুলো সঠিক সময়ে বাজারে সরবরাহ করতে না পারায় কয়েনের সংকট তৈরি হয়েছে। বাজারে এক ও দুই টাকার কয়েন না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি ক্রেতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা হাসান শামীম বলেন, ‘ব্যাংকে এক ও দুই টাকার পর্যাপ্ত কয়েন রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এক এবং দুই টাকার কয়েন চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ সরকারের অলস টাকা পড়ে রয়েছে ব্যাংক এবং মানুষের বাসা বাড়িতে। কয়েন বাড়িতে পড়ে থাকার কারণে অর্থনৈতিক গতিশীলতা কমেছে।’