হজ ও কোরবানির মৌসুমে আল্লাহর মহিমা ঘোষণার জন্য এক বিশেষ জিকির করার কথা কোরআন-হাদিসে এসেছে। জিলহজের ৯ তারিখ ফজরের নামাজের পর থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর এই বিশেষ জিকির পাঠ করতে হয়। একে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়। তাকবিরে তাশরিক হলো ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ (হেদায়া: ১/২৭৫)
তাকবিরে তাশরিক পাঠের অনেক ফজিলত রয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যেন তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সুরা হজ: ২৮) বিখ্যাত সাহাবি ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে ‘আইয়ামে তাশরিক’ ও ‘আল্লাহর স্মরণ’ বলতে তাকবিরে তাশরিক বোঝানো হয়েছে। (বুখারি)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘এই দিনগুলোতে তাকবিরে তাশরিকের আমলের চেয়ে অন্য কোনো দিনের আমল উত্তম নয়।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী করিম (সা.) বলেন, ‘জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়ে জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।’ (বুখারি)
তাশরিকের দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পুরুষদের ওপর উচ্চস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। আর নারীরা নিচু স্বরে পড়বেন, যাতে নিজে শোনেন। (শামি: ২/১৭৮)
ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়া হোক বা একাকী, ওয়াক্তের মধ্যে পড়া হোক বা কাজা, নামাজি ব্যক্তি মুকিম হোক বা মুসাফির, শহরের বাসিন্দা হোক বা গ্রামের—সবার ওপর ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। (দুররে মুখতার: ২/১৮০)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক