হোম > ছাপা সংস্করণ

কলেজের পথে বেরিয়ে ফেরা হলো না নাঈমের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘আমি কেন কলেজে যাওয়ার জন্য ছেলেকে বিদায় দিলাম। এক টেবিলে নাশতা করে আমার কাছ থেকে বিদায় নিল। ওর এ বিদায় যে চিরবিদায় হবে আমি বুঝতে পারিনি। বুঝলে বুকের ভেতর আঁকড়ে ধরে রাখতাম।’ নটর ডেম কলেজছাত্র নাঈম হাসানের (১৭) সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর বাবা শাহ আলম ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে এভাবেই আহাজারি করছিলেন।

গতকাল রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লা পরিবহনের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারায় নাঈম। নাঈম নটর ডেম কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের ছাত্র ছিল।

নাঈমের বাসা কামরাঙ্গীরচর জাউলাহাটি চৌরাস্তায়। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব কাজিরখিলে। তার বাবার নীলক্ষেতে বইয়ের দোকান আছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে নাঈম ছিল ছোট। বড় ভাই শাহরিয়ার হাছান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। গ্রামের বাড়িতে তার দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী গুলিস্তান পাতাল মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. রাসেল বলেন, বেলা ১১টার দিকে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল নাঈম। এ সময় বায়তুল মোকাররমগামী সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ি মোড় ঘুরছিল। অতিরিক্ত গতি থাকায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ধাক্কা দেয় নাঈমকে। পরে চাপা দিয়ে চলে যায়। কয়েকজন পথচারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন নাঈমের বাবা শাহ আলম।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার পর চালক রাসেলকে আটক করা হয়। সিটি করপোরেশনের ময়লার ওই গাড়িও

জব্দ করা হয়। তবে এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

নাঈমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নটর ডেম কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে এসে নগর ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় ভবনের সামনেই স্লোগান দেয় তারা। সিটি করপোরেশনের কারও সঙ্গে কথা বলতে না পেরে কিছুক্ষণ পর দুর্ঘটনাস্থলে চলে এসে সমাবেশ করে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দিনভর বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। অনেকের বুকে-পিঠে লেখা ছিল, ‘আমি বাঁচতে চাই’। তারা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস (আমরা ন্যায়বিচার চাই) ।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষকেরা। সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নটর ডেম কলেজের শিক্ষক ভিনসেন্ট তিতাস রোজারিও বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরাও ব্যথিত। সবাই আজ নাঈমকে হারিয়েছি। এখন আমরা চাই, প্রতিটি রাস্তাঘাট যেন আমাদের সন্তানদের চলাচলের জন্য নিরাপদ হয়।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার বিচার, সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ছয় দফা দাবি তুলে সন্ধ্যায় রাস্তা ছাড়ে। দাবির মধ্যে আছে, রাস্তায় যেকোনো প্রাণের নিশ্চয়তা দিতে হবে; নাঈমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; ট্রাফিক আইন জোরালো করতে হবে; নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়ন করতে হবে এবং গুলিস্তানে ফুট ওভারব্রিজ তৈরি।

এই দুর্ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু উল্লেখ্য করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ