সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ও জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ‘স্বপ্নযাত্রা’ নামের অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়নে গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ‘স্বপ্নযাত্রা’ অ্যাম্বুলেন্স সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে শুরু করা হয় এ কার্যক্রম। এখন জেলার ৫৮টি ইউনিয়নে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে এ সেবা কার্যক্রম চলছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলো জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে কেনা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সদর জেলাসহ পাঁচটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিয়ে চলেছে অ্যাম্বুলেন্সগুলো। গুগল প্লে স্টোর থেকে স্বপ্নযাত্রা নামের একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে এই সেবার বিস্তারিত তথ্য জানা ও সেবা পাওয়া যাবে। অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে কল করলে মুমূর্ষু রোগীদের যথাসময়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়াসহ স্বাস্থ্য সহায়তা দিচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সগুলো।
গত বুধবার সকালে সদর হাসপাতালের সামনে, কথা হয় সদর উপজেলার হামছাদীর আয়েশা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, হঠাৎ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্স খুঁজে না পেয়ে স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স সেবা কার্যক্রমে কল দেন স্বজনেরা। স্বল্প খরচে অল্প সময়েই বাড়িতে পৌঁছে যায় স্বপ্নযাত্রার অ্যাম্বুলেন্স। ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।
উত্তর হামছাদী এলাকার নাজমুল করিম টিপু বলেন, ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যেখানে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের থেকে কয়েক গুন কম। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে হাট-বাজারসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এ সেবা মিলছে। সহজে এ সেবা পেয়ে খুশি এলাকাবাসী।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাউদ্দিন টিপু বলেন, কম করছে ও সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেয়ে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। জেলাজুড়ে এ সেবা কার্যক্রম ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন জানান, ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গ্রামীণ পর্যায়ে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এ অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা হয়েছে। সরকারি অনুদানে নয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব অর্থায়নে চলছে এ কার্যক্রম।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ‘সেবা কার্যক্রমটি চালু করার পরপরই ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। সারা দেশে এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে পারলে মৃত্যু হার কমবে।’ এ সেবা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে ডিসি এ কার্যক্রমে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।