সকাল হলেই পত্রিকা নিয়ে শহরের অলিগলিতে ছোটেন গৌতম দাস বাবলু। গ্রাহকের দ্বারে পৌঁছে দেন পত্রিকা। রোদ-বর্ষা-শীত উপেক্ষা করে ৩৫ বছর ধরে পত্রিকা বিলি করছেন তিনি।
বাবলুর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌর শহরের শান্তিবাগ এলাকায়।
গত বুধবার মুক্তিযোদ্ধা পীরগঞ্জ কমপ্লেক্স চত্বরে পেপার বিক্রির সময় গৌতমের সঙ্গে কথা হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়, এনজিও সংস্থা, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থানে পত্রিকা বিলি করেন তিনি।
বাবলুর লেখা বেশ কিছু নাটক বিভিন্ন স্থানে মঞ্চায়ন হয়েছে। তাঁর নাটক বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হয়েছে। নাটকের জন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি উপজেলার উদীচীর শিল্পী গোষ্ঠীর সহসভাপতি।
বাবলু আজকের পত্রিকাকে জানান, তরুণ বয়স থেকে পত্রিকা বিলির কাজ করেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে দেখেন, পত্রিকা বিলি করার এই কাজে ৩৫ বছর পার হয়ে গেছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘১৯৮৭ সালের কথা। ওই সময় পত্রিকার সংখ্যা ছিল কম এবং তিন-চার দিন পরপর কাগজ আসত। তখনকার সময় হকার আমিসহ দুজন। প্রতিদিন ভোরে পত্রিকা সংগ্রহ করতে যেতে হতো বোচাগঞ্জ উপজেলায়। রাস্তা ছিল তখন দুর্গম। রোদ-বৃষ্টি-ঝড় বা শীত উপেক্ষা করে পত্রিকা ঠিকই পাঠকের দ্বারে পৌঁছে দিতাম। পাশাপাশি আমি নাট্য চর্চা করতাম।’
বাবলু জানান, তাঁর স্ত্রী গৃহিণী। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পত্রিকা বিক্রি করেই ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করছেন। ছেলে মাস্টার্সে পড়ছেন। মেয়ে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পড়ছেন। শুধু পত্রিকা বেচে সংসার চলে না। অতি কষ্টে দিনযাপন করছেন তিনি।
উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আজম রেহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাবলু দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সঙ্গে পৌরশহরে পেপার বিক্রি করে আসছেন।’
পীরগঞ্জ পৌর সভার পত্রিকার এজেন্ট ও পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এন কে রানা জানান, বাবলু অত্যন্ত পরিশ্রমী। প্রতিদিন ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুতি নেন নতুন দিনের খবরের কাগজ পাঠকের হাতে তুলে দিতে। সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন জাতীয় ও স্থানীয় খবরের কাগজ বিক্রি করে আসছেন তিনি।