সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ। গত বৃহস্পতিবার উদ্যাপিত হওয়া বিজয় দিবস উপলক্ষেও স্থাপনাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়নি।
উল্লাপাড়ার ঘাটিনা রেললাইন ব্রিজ এলাকায় ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শামসুদ্দিন, আব্দুল লতিফ মির্জা, লুৎফর রহমান অরুণ, আনোয়ার হোসেন পাহড়ী, ফজলুর মমিন মুক্তা, মোজাফর হোসেন মোজান, জাকির হোসেন, সামছুল আলম (কয়ড়া) ও সামছুল আলম (বেতুয়া)।
এই স্মৃতি ধরে রাখতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। সাংসদ তানভীর ইমাম ২০১৯ সালে ২৬ মার্চ এটি উদ্বোধন করেন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, স্মৃতিস্তম্ভের মূল ফটকে পড়ে আছে গবাদিপশুর বিষ্ঠা। ভেতরের অবস্থাও নোংরা। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে ছাগল, ভেড়া চড়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্মৃতিস্তম্ভ এলাকায় সন্ধ্যা হলেই বসে নেশা ও জুয়ার আড্ডা। এ ছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপও চলে। ভেতরে থাকা বিদ্যুতের যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে গেছে।
স্থানীয় যুবক শাকিল হোসেন বলেন, ‘এই স্মৃতিস্তম্ভ দেখলে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা মনে পড়ে। বাঙালি হিসেবে প্রত্যেক শহীদকে আমাদের মর্যাদা দিতে হবে। কিন্তু গেল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিনে স্মৃতিস্তম্ভটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়নি। ভেতরের এমন নোংরা পরিবেশ দেখলে কেউ আসতে চাইবে না। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, এটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। স্মৃতিস্তম্ভটি সংরক্ষণ না করায় এখন অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। তবে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে সেখানে পাহারাদার নিয়োগ দিতে। এ ছাড়া স্মৃতিস্তম্ভটি নান্দনিক করতে চারপাশে ফুলের গাছ লাগানো ও শিশু পার্ক করা হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, খুব দ্রুতই স্মৃতিস্তম্ভটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।