হোম > ছাপা সংস্করণ

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

মো. মিজানুর রহমান, কাউনিয়া

সালেহা বেগমের সম্বল বলতে ছয় শতাংশের বসতভিটা ছাড়া আর কিছু নেই। সেই ভিটার পাশে চলে এসেছে তিস্তা নদী। দুই মাস ধরে ভাঙন আতঙ্কে তাঁর রাত কাটছে নির্ঘুম।

শুধু সালেহা নয়, তাঁর মতো কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামসহ বালাপাড়া ইউনিয়নে তিস্তা তীরবর্তী ২ শতাধিক পরিবার রয়েছে আশ্রয় হারানোর ভয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী ১০ গ্রামের অংশবিশেষ বিলীন হতে চলেছে। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিদিন ধসে পড়ছে মাটি।

চরগনাইয়ের সালেহা বলেন, আগে তাঁদের আবাদি জমি ও হালের গরুসহ অনেক কিছু ছিল। কিন্তু নদী ভাঙতে ভাঙতে সব শেষ করে দিয়েছে। বসতভিটার ১৩ শতাংশ জায়গার অধিকাংশ এ বছর বিলীন হয়ে গেছে। যেটুকু আছে তা-ও কখন যে ভেঙে নদীতে চলে যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। রাতে কখনো ঘুমালেও পাড়ভাঙা আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর।

একই গ্রামের আজিজার রহমান জানান, তিস্তার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজনের বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছেন অনেকে।

নদী ভেঙে চর বিশ্বনাথ গ্রামের আয়শা আক্তারের বাড়ির কাছে চলে এসেছে। তিনি বলেন, ‘সবসময় আতঙ্কে থাকি, কোন সময় ভেঙে যায়। আগে তিনবার বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়েছি। এখন আবার সরাতে হবে। ভাঙনের ভয়ে ঘুমাতে পারি না, স্বামী-সন্তান নিয়ে জেগে থাকি।’

একই আতঙ্কের কথা জানান চরগনাই গ্রামের আবু বক্কর। তাঁর অভিযোগ, ভাঙন রোধে তালুক শাহাবাজ গ্রামে নদীপাড়ে বালুর ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের গ্রামে বেশি ক্ষতি হলেও বস্তা ফেলা হচ্ছে না।

পূর্ব তালুক শাহাবাজ এলাকার অধিকাংশ পরিবার একাধিকবার তিস্তার ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় অন্যের জমিতে ও বাঁধের ওপর বসবাস করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন না ঠেকালে তাঁদের আজীবন রাস্তায় পড়ে থাকতে হবে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষীরোদ চন্দ্র।

টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনে তাঁর ইউনিয়নের অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নদীর পাড় ভাঙছে। তীরবর্তী গ্রামের কয়েক শ ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

একই কথা জানালেন বালাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আনছাড় আলী। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল ও টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে বাঁশ পুঁতে নদীর তীরে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এগুলো সাময়িক।

এ বিষয়ে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব আজকের পত্রিকাকে জানান, কাউনিয়া উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে খালি জিও ব্যাগ সরবরাহ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধ হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের আর দুর্ভোগ থাকবে না।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ