হোম > ছাপা সংস্করণ

তিন নদীর বালু লুট, ভাঙন

আরিফুল হক তারেক, মুলাদী

মুলাদীতে ড্রেজার পুড়িয়ে কিংবা জব্দ করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ বালু উত্তোলন। প্রশাসনকে পাহারা দিয়ে রাতের আঁধারে উপজেলার তিন নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন ব্যবসায়ীরা। গোটা উপজেলায় কোনো বালুমহাল না থাকলেও ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন এলাকা বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, গত ৩ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নৌ-থানার কাছে একটি ড্রেজার পুড়িয়ে দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুর রহমান। সর্বশেষ গত শনিবার বিকেল ৪টার দিকে একই এলাকা থেকে আরও একটি ড্রেজার জব্দ করা হয়। আগের রাতেই আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, উপজেলার আড়িয়াল খাঁ, জয়ন্তী ও নয়াভাঙনী নদীতে কমপক্ষে ২০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। নাজিরপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের বানীমর্দন, ঢালী বাড়ি লঞ্চঘাট, সাহেবেরচর গুচ্ছগ্রাম, নলগোড়া, নাতিরহাট এলাকায় থেকে বালু উত্তোলন করেন ব্যবসায়ীরা। বাটামারা ইউনিয়নের রামচর, আলিমাবাদ, ঘুলিঘাট, লক্ষ্মীরহাট, তয়কা, টুমচর এলাকায় রাতে ড্রেজার বসানো হয়। জয়ন্তী নদীর চরবাটামারা, সফিপুর ব্রজমোহন, চরমালিয়া, ষোলঘর, মৃধারহাট এলাকা থেকে বালু ওঠানো হয়। নয়াভাঙনী নদীর চরডুমুরীতলা, নোমরহাট, চরপত্তনীভাঙা, হিজলা-মুলাদী সংযোগ সেতু এলাকা, নোমাকান্দি, চরমাধবরায়, চরবাহাদুরপুর, একতার হাট, দক্ষিণ বাহাদুরপুর এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। উপজেলার অন্তত ২৫-৩০টি স্থান থেকে বালু তোলার অভিযোগ মিলেছে।

মৃধারহাটের ব্যবসায়ী রতন সরদার জানান, বাজার-সংলগ্ন এলাকা থেকে দিনে-রাতে বালু উত্তোলন করা হয়। এতে ব্যাপক নদীভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। কিছুদিন আগে মৃধারহাটের ১০-১২টি দোকানসহ বিশাল অংশ নদীতে ভেঙে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে পুরো বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

নাজিরপুর বন্দরের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে নাজিরপুর সাহেবেরচর এলাকায় একটি ড্রেজার দিয়ে বালু সরবরাহ করা হচ্ছিল। সংবাদ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেখান থেকে ড্রেজারটি জব্দ করেন। কর্মকর্তার আসার সংবাদ পেয়েই ড্রেজারের কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে। পরে রাতে আবার একটি ড্রেজার এনে ব্যবসায়ীরা ওই জায়গা থেকেই বালু উত্তোলন করেছেন।

নাজিরপুর বন্দরের আরেক ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘গত ৩ জানুয়ারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজিরপুর নৌ-থানা এলাকায় একটি ড্রেজার পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেখানে কয়েক দফা বালু উঠিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নৌ-থানার কাছে এভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন কীভাবে হয়, তা আমাদের প্রশ্ন?’

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বানীমর্দন গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, রাত নামলেই নদীতে ড্রেজার মেশিনের আওয়াজ শোনা যায়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছুই করার থাকে না। ব্যবসায়ীরা দিনের বেলায় ড্রেজার পার্শ্ববর্তী উপজেলার নদী এলাকায় নিয়ে রাখেন। আবার অভিযানের সংবাদ পেলেই পালিয়ে যান। এসব বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই হামলাসহ বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়।

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন চাইলে পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুর রহমান জানান, বালুমহাল না থাকায় উপজেলার কোনো নদী থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। একটি ড্রেজার পোড়ানো এবং দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনে রাতের বেলায় অভিযান চালানো হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ