বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন এক তরুণী। সব শুনে-বুঝে চিকিৎসক তাঁকে এমন এক ওষুধ দিলেন, যাতে তাঁর বুকের ব্যথা উধাও। জীবনের ব্যথাও হয়তো আপাতত কমল, একেবারে গেল কি না, বোঝা যাবে আরও পরে। তরুণীর প্রেমিককে হাসপাতালে ডেকে এনে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসক– এটাই ওষুধ, এটাই পথ্য।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘটেছে এ ঘটনা। সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডের মা হাসপাতালে বিয়ে হয়েছে খাদিজা (১৮) নামের ওই তরুণী ও তাঁর প্রেমিক ওয়ালী উল্লাহর।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকার মো. ইউসুফের মেয়ে খাদিজা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা-বাবাও। রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক মাহফুজ দেখেন আসলে কোনো সমস্যা নেই। তখন চিকিৎসকের সন্দেহ হয়। তিনি খাদিজার মা-বাবাকে চেম্বার থেকে বাইরে যেতে বলেন। এরপর জিজ্ঞাসা করলে খাদিজা জানান, তিনি ওয়ালী উল্লাহ নামে একজনকে ভালোবাসেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে বাবা-মা বিয়ে দিতে চান না। অন্য জায়গায় তাঁর বিয়ে ঠিক করেছেন। তাই বিয়ে ঠেকাতে তিনি বুকে ব্যথার ভান করে হাসপাতালে এসেছেন।
তারপরও খাদিজার কথায় বিশ্বাস না করে কয়েকটি টেস্ট করানোর জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান চিকিৎসক মাহফুজ। এসব টেস্টেও দেখা যায় রোগীর কোনো সমস্যা নেই। তখন চিকিৎসক খাদিজার প্রেমিককে ফোন করে বলেন, খাদিজার অবস্থা খুব খারাপ। দ্রুত যেন তিনি হাসপাতালে আসেন। এ পর্যায়ে খাদিজার বাবা-মাকে বিষয়টি জানান চিকিৎসক।
তখন খাদিজার বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে জানান, ওয়ালী উল্লাহকে বিয়ে করলে মেয়েকে তিনি বাড়িতে উঠতে দেবেন না। কিন্তু খাদিজা বিয়ের দাবিতে অনড়। অনেক বোঝানোর পর একপর্যায়ে আপস করেন তাঁর বাবা-মা, রাজি হন বিয়েতে। তখন ছেলের পক্ষ থেকে ছেলের দুলাভাই আর খালাকে আসতে বলা হয়। হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফদের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বর-কনে দুজনই পোশাক কারখানার কর্মী।