কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে উপজেলা রেশম সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপক মো. স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এরপরও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বক্তব্য না থাকায় পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে অন্তত এক ডজন লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এরপরও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভিতরবন্দ ইউনিয়নের দোয়ারীপাড়ার মোছা. ফরিদা পারভীনের দেওয়া অভিযোগটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা বন কর্মকর্তা সাদিকুর রহমানকে। তদন্ত শেষে তিনি গত ৭ মার্চ ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। এতে স্বপন মিয়ার ঘুষ নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের শিয়ালকান্দা এলাকার কপিল উদ্দিনকে তুঁত চাষের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। শিয়ালকান্দা এলাকার কপিল উদ্দিন, বোর্ডের হাট এলাকার নুরুন্নাহার বেগম, বড়ভিটা এলাকার রুমিনা বেগম, মতিয়ার রহমানসহ অনেকেই একই অভিযোগ তোলেন। এ ছাড়া ফুলবাড়ী উপজেলার রাবাইতারী এলাকার কৃষক প্রফুল্ল চন্দ্রসহ ১০ জনের কাছ থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার আশ্বাসে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন।
অন্য অভিযোগ থেকে জানা গেছে, রেশম পোকা পালনের জন্য ঘর দেওয়ার নামে নাগেশ্বরী উপজেলার পন্থাবাড়ী সাতকুড়ারপাড় এলাকার রজয় চন্দ্রের স্ত্রী মেনেকা বালার কাছে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন এবং তাঁর কাছে আরও ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা এলাকার আজিমুদ্দিনের স্ত্রী উমিনা বেগমের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা না দিলে ঘর ভেঙে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেন স্বপন মিয়া।
নাগেশ্বরীর বদিজামালপুর গ্রামের ফরিদা পারভীন ও নুরুন্নাহার এবং ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা এলাকার মেনেকাবালা বলেন, ‘বিভিন্নভাবে ম্যানেজার স্বপন মিয়া আমাদের কাছে ঘুষ নিয়েছেন। ঘুষ নিয়ে আমাদের হাতে একটি করে কার্ড ধরিয়ে দিয়েছেন।’
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা রেশম সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপক স্বপন মিয়া।
তদন্তকারী ও উপজেলা বন কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, তদন্তে স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে চাষিদের থেকে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
ইউএনও নূর আহমেদ মাছুম জানান, প্রথম তদন্ত প্রতিবেদনে কোনো অভিযুক্তের বক্তব্য না থাকায় পুনরায় বন কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।