হোম > ছাপা সংস্করণ

কমলাকান্তপুরের আইনজীবী

রিমন রহমান, রাজশাহী

গ্রামের নাম কমলাকান্তপুর। সাক্ষী হিসেবে এজলাসে দাঁড়িয়ে উকিলকেই নাজেহাল করা বঙ্কিমচন্দ্রের কমলাকান্ত এ গ্রামে জন্ম নেননি। তবে এখানে জন্মেছিলেন সাক্ষীদের পেটের কথা মুখে বের করে আনা এক জাঁদরেল উকিল। তিনি সত্তরের দশকে সারা দেশে আলোচিত নীহার বানু হত্যা মামলায় লড়েছেন। এক-এগারোর সময় গ্রেপ্তার হওয়া শেখ হাসিনার মামলায় যুক্তিতর্ক করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। 

প্রথিতযশা এই আইনজীবীর নাম গোলাম আরিফ টিপু। ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট ব্রিটিশ-ভারতের মালদহ জেলার কমলাকান্তপুরে জন্ম তাঁর। দেশভাগের পর গ্রামটি পড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। তিনি ৯৩ বছর বয়সে গত শুক্রবার সকালে ঢাকায় মারা যান। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গত শনিবার তাঁর লাশ গ্রামের বাড়ি ও রাজশাহী কলেজে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। 

গোলাম আরিফ আইন বিষয়ে রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এরপর রাজশাহী ফিরে এসে আইনপেশায় মনোনিবেশ করেন। ১৯৭৬ সালে খুন হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নীহার বানু হত্যা মামলায় বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে তাঁর যশ ছড়িয়ে পড়ে। বগুড়ায় সামরিক আদালতে ১৯৭৭ সালে বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হয়। পরে সারা দেশে অসংখ্য মামলায় তিনি বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে নাম করেন। অনেক রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও গরিব মানুষের মামলা তিনি বিনা পয়সায় লড়াই করেছেন। তিনি কয়েকবার রাজশাহী বার সমিতির সভাপতি হন। এক-এগারোর সময় তিনি ঢাকায় পাড়ি দেন এবং সে সময় কারাবন্দী থাকা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌঁসুলি হিসেবে আদালতে আইনি লড়ায় চালান। পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে ২০১০ সালে তাঁকে প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এ পদে ছিলেন।

ভাষা আন্দোলনে অসামান্য অবদান রাখায় সরকার ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোলাম আরিফকে ভাষাসংগ্রামী হিসেবে একুশে পদকে ভূষিত করে। কিন্তু এই খুশি বিষাদে ঢেকে গিয়েছিল একই বছরের ডিসেম্বরে। তখন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ভাতাভোগী এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, তালিকায় নিজের নাম দেখে তিনি হতবাক, বিস্মিত, মর্মাহত ও অপমানিত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সীমাহীন অযত্ন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে অত্যন্ত অবহেলার সঙ্গে এ তালিকা প্রকাশ করেছে। সমালোচনার মুখে তখন ওই তালিকা স্থগিত ঘোষণা করে ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেয় মন্ত্রণালয়। 

গত শনিবার রাজশাহী কলেজে গোলাম আরিফের মেয়ে ডানা নাজলী বলেন, ‘আমার বাবার কোনো চাওয়া ছিল না। তিনি জীবনে যা পেয়েছেন তা-ই নিয়ে খুশি ছিলেন। তিনি জীবনে সবকিছুই পেয়েছেন, এটা বলতেন। কোনো আক্ষেপ ছিল না। বাবার যে আদর্শ সেটা নিয়ে আমরা সারাজীবন বাঁচব। সৎ থেকে মানুষের কল্যাণে যা যা করা যায়, তিনি তাঁর সবই করতেন। আমরা চেষ্টা করি অন্যায় কোনো কিছু না করার, বাবার মতো সৎপথে থাকার।’ 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ