হোম > ছাপা সংস্করণ

বিশ্ব ক্যানসার দিবস: ৫৩ বছরেও হয়নি ক্যানসার নিবন্ধন

রাশেদ রাব্বি, ঢাকা

বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর অন্যতম কারণ ক্যানসার। দেশে প্রতিবছর দেড় লাখের বেশি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হন, ১ লাখ ১০ হাজারের মতো মৃত্যু হয়। এ সত্ত্বেও দেশে ক্যানসার চিকিৎসায় নেই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। এর অন্যতম কারণ, স্বাধীনতার পর ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো ক্যানসারের গতি-প্রকৃতি নির্ণয়ে হয়নি জাতীয় ক্যানসার নিবন্ধন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ রোববার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যানসার দিবস।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো দেশে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সঠিক তথ্য-উপাত্ত, যা রোগ নির্ণয়, নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক। এর জন্য জাতীয় ক্যানসার নিবন্ধনের বিকল্প নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্যানসারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসা, রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রস্তুতি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ইত্যাদি নিশ্চিত করতে জাতীয় ক্যানসার নিবন্ধন জরুরি। ইতিপূর্বে এই কাজটি না হলেও আমরা শুরু করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সহযোগিতায় বিএসএমএমইউ পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের একটি দল কাজটি করছে।’

ডা. মো. খালেকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ৮৫ হাজার মানুষকে নিবন্ধনের আওতায় এনেছি। এই উপজেলার আড়াই লাখ মানুষকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। পরবর্তীকালে পাশের অন্য একটি উপজেলাকে সম্পৃক্ত করা হবে।’ প্রাথমিক তথ্যে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার প্রায় সমান বলে জানান তিনি। এ ছাড়া শিশুদের আক্রান্তের হার প্রায় ৭ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আওতাধীন আন্তঃসরকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বে ২ কোটি নতুন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯৭ লাখ মানুষের। এর মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে ২০২২ সালে ক্যানসারে ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানকে ফুসফুসের ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটির মতে, তামাক ব্যবহার পরিহারসহ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ক্যানসারে মৃত্যুঝুঁকি ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে-২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ (৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন। এর বাইরে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন আরও সাড়ে ৩ কোটির মতো মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

আইএআরসি প্রকাশিত ক্যানসারবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন গ্লোবোক্যান-২০২০-এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশের কারণ ক্যানসার, যা এ দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ষষ্ঠ প্রধান কারণ। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭৫ জন নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মারা যান ১ লাখ ৮ হাজার ৯৯০ জন। এর মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারে মৃত্যু হয় ১১ দশমিক ১ শতাংশ।

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাধারণত গ্লোবোক্যানের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকি। কারণ, আমরা দেশে ক্যানসারের প্রকৃত অবস্থা জানি না। ফলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আক্রান্তদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়াও সম্ভব হয় না।’

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণারত ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যানসার-সংক্রান্ত সব তথ্যের জন্য আমরা অন্যদের ওপর নির্ভরশীল। এসব তথ্য মূলত পরিসংখ্যাননির্ভর। আমাদের নিজেদের গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক উপাত্তের মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষণীয়। তাই ক্যানসার নিবন্ধন করতে পারলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ