ভূমিহীন সালেমা খাতুন। নিজের কোনো জমি না থাকায় স্বামী মনসুর আলী ও ছয় সন্তানকে নিয়ে অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন প্রায় সাত বছর ধরে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে একমাত্র ঘরটিও নির্মাণ করেছেন গ্রামের বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায়। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে কালবৈশাখীতে ঘরটি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন সালেমা খাতুন।
গতকাল বুধবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার থাকার আর জায়গা নাই। একমাত্র ঘরটিও তুফান ভেঙে নিয়ে গেছে গেছে। এখন কোথায় যাব, কোথায় থাকব সন্তানদের নিয়ে?’
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সালেমা খাতুনের বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোরকমে সংসারের জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝড়ে সালেমা খাতুনের ঘর ভেঙে পড়ে। এ সময় ঘরে ভেতরে যারা ছিলেন তাঁরাও চাপা পড়ে যান। তাঁদের চিৎকার শুনে রাতেই প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে নিয়ে যান।
সালেমা খাতুন বলেন, ‘প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসায় পরিবারের সবাই অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাই। অভাব অনটনের সংসার। হাতে টাকা-পয়সা নেই। এখন কীভাবে ভাঙা ঘর মেরামত করব, স্বামী-সন্তান নিয়ে কোথায় থাকব ভেবে পাচ্ছি না।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, ‘ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন সালেমা খাতুনের পরিবারের খোঁজ নেওয়া হবে। ওই ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। এখানে আশ্রয় প্রকল্পের কাজ শুরু হলে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’