হোম > ছাপা সংস্করণ

ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ আটকে যায় আপিলে

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মা-মেয়ে খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আর এক আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করেছেন। গতকাল আপিল বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। ২০০৬ সালের ২০ অক্টোবর রাজশাহীর গোদাগাড়ীর গৃহবধূ মিলিয়ারা খাতুন ও তাঁর মেয়ে পারভীন খুনের মামলার আসামি তাঁরা।

খালাস পাওয়া আসামির পরিবারের সদস্যরা বলছেন, নিম্ন আদালতের রায় হওয়ার পর থেকেই তাঁরা ছিলেন ফাঁসির আসামির সেলে (কনডেম সেল)। তাহলে তাদের জীবনের যে ক্ষতি হয়ে গেল তার দায় কার? তাঁরা কি কোনো দিন ক্ষতিপূরণ পাবেন?

রাজশাহীর দুটি পরিবারের সদস্যরা হয়তো ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কিন্তু তাঁরা জানেন না বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। বিভিন্ন ঘটনা বিবেচনায় হাইকোর্টের বেঞ্চ যেসব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন, তার বেশির ভাগই কোনো ক্ষতিপূরণ পান না। আপিলে গেলেই আটকে যায় ক্ষতিপূরণের মামলা। ফলে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি তখন শুধু আশ্বাসেই থেকে যায়।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলে আদালত বা আমরা তো জানি না এ-সংক্রান্ত মামলা কোনগুলো। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করতে পারেন। তখন হয়তো বিষয়গুলো দেখা যাবে।’

টাঙ্গাইলের জাহালমের প্রসঙ্গেই আসা যাক। সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালে ৩৩টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে আবু সালেকের বদলে ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার করা হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে। কয়েক বছর পর বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে জাহালমকে মুক্তি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্র্যাক ব্যাংককে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ব্র্যাক ব্যাংক। আটকে যায় ক্ষতিপূরণ। এখনো সেই অবস্থা আছে। আজও জাহালম ক্ষতিপূরণ পাননি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, এ-সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে ক্ষতি-গ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা উচিত।

উদাহরণ আরও আছে। পল্লবীর বেনারসি শাড়ির কারিগর মো. আরমান নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে রিট করলে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর তাঁকে মুক্তি দিয়ে

এরপর পৃষ্ঠা ২ কলাম ৫

রায় দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিনা অপরাধে কারাবাস করায় আরমানকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দিতে আইজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ জানুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত করে দেন। আরমান আর ক্ষতিপূরণ পাননি।

আরমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, ক্ষতিপূরণের টাকা পেলে কিছু একটা করা যেত।’

২০১৭ সালের ২ এপ্রিল সন্ধ্যায় বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে সি-ট্রাক থেকে যাত্রী নামিয়ে ১৫০ গজ দূরে গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছে দেওয়ার সময় যাত্রীবাহী নৌকা উল্টে যায়। সে সময় দুই শিশুসহ ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় সন্দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ জহরুল ইসলাম রিট করেন।

রিটের শুনানি শেষে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ করে মোট ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। আর নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধে ব্যর্থ হলে সুদসহ টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। বিআইডব্লিউটিসি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে এই টাকা প্রদান করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে আপিল করলে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর হাইকোর্টের দেওয়া সে রায়ও স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। আটকে যায় ক্ষতিপূরণ পাওয়া।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, যাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন তারা তো এমনিতেই নিঃস্ব। তাঁদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী নিয়োগ করে আপিল বিভাগে মামলা চালানো সম্ভব নয়। এ জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি এগিয়ে আসতে পারে। এ ছাড়া আদালতও এসব মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করতে পারেন। তা না হলে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি শুধু আদেশেই থেকে যাবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ