বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। গতকালের ভাঙনে ৩টি বসতবাড়ি পুরোপুরি নদীগর্ভে ধসে পড়েছে। ১০০ বছরের পুরোনো ঈদগাহর বেশ কতকটাও নদীতে গিয়েছে। নদীর পেটে যাওয়ার পথে একটি মসজিদও।
কোনো কিছুতেই যেন থামছে না সর্বনাশা সুগন্ধা নদীর ভাঙন। নদী বেষ্টিত বাবুগঞ্জ উপজেলার চারদিকে শুধু ভাঙনের শব্দ। গতকাল রোববার সকাল ৭টার সময় উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের ইদ্রিস আলী বেপারী, মো. বাবুল হাওলাদার ও ওমর আলীর বসতঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পশ্চিম ক্ষুদ্রকাঠী জামে মসজিদ এবং শত বছরের ঈদগাহও ভাঙছে। এ ছাড়াও ঝুঁকিতে রয়েছে মজিবুর রহমান, আব্দুর রব, জাহাঙ্গীর খান, ইউনুস সরদার, শামিম আকন, মো. হানিফ, কালাম খান, সফর আলী খন্দকার, শহিদুল ও হজরত আলীসহ আরও অর্ধ শতাধিক মানুষের বাড়িঘর। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আশপাশের বাড়ি-ঘরের মালামালসহ ঘর সরিয়ে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। মসজিদের টিন, ইটও খুলে সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমীনুল ইসলাম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন ক্ষুদ্রকাঠী এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়াও বাবুগঞ্জ উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মো. গোলাম হোসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সুলতান মোল্লাসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে এলাকার বাসিন্দা মো. মানিক মৃধা, মো. সেলিম হাওলাদার ও শাহ আলম হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদী থেকে বালু উত্তোলন ও ইটভাটায় মাটি কেটে নেওয়া এবং পরিকল্পিত নদী শাসন না করায় নদী ভাঙন থামছে না। ভাঙন রোধে এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ইদ্রিস আলীর পরিবার জানায়, কিছু টের পাওয়া আগেই হঠাৎ গতকাল সকাল ৭ টার দিকে নদী ভাঙন শুরু হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার মধ্যেই বাড়ি নদীর পেটে চলে গিয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরোয়ার মাহমুদ বলেন, নদী ভাঙন বাবুগঞ্জের মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। নদী ভাঙন রোধে সরকার মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা মীরগঞ্জ, এয়ারপোর্টের উত্তর অংশ ও বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু এলাকা ভাঙন থেকে রক্ষা করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।