হোম > ছাপা সংস্করণ

গয়নায় সমুদ্রের ছোঁয়া

সমুদ্রপাড়ের ভেজা বালুতে পায়ের ছাপ ফেলে ঘুরে বেড়ানোর সময় ঠিক গোড়ালির পাশে পড়ে থাকা মৃত শামুকের খোলস হাতে তুলে নেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। পকেটে পুরে নেওয়া সেই ছোট্ট শামুকটি শহরে ফিরেও যত্নে তুলে রাখেন বাক্সে, সাজঘরের আয়নার সামনেও শোভা পায় সেই খাঁজকাটা খোলস। হলুদাভ সাদায় মেশানো শামুকটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখতে দেখতে নস্টালজিয়ায় ডুবে যাই আমরাও। সমুদ্রের ধরনভেদে পাল্টায় এই শাঁসের রং ও ধরন।

সি-শেল বা সামুদ্রিক শাঁস বরাবরই মানুষকে ভাবিয়েছে, অভিভূত করেছে তো বটেই। এসব কড়ি, ঝিনুক, শামুক, করতাল নিয়ে যুগে যুগে কতশত ভাবনায় ডুবেছে মানুষের মন, গড়ে উঠেছে কতই না কল্পকাহিনি। লোকে ভাবতে ভালোবাসে, চাঁদের রুপালি আলোর প্রভাবে বুঝি কড়ি, ঝিনুক, শামুক, করতাল ইত্যাদি সামুদ্রিক শাঁসের রং এমন চকচকে। আবার শামুকের ভেতর লুকিয়ে থাকা রাজকন্যা আর ঝিনুকের মধ্যে থাকা জিরোধনী নামের ছোট্ট মেয়ের গল্পও ফুটেছে নানা দেশের মানুষের মুখে মুখে।

বিভিন্ন দেশের সাগর ও মহাসাগরে জন্মানো সামুদ্রিক শাঁস যুগে যুগে মানুষের বিনিময়ের মাধ্যম, বিশ্বাস বা শুভশক্তির ধারক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে, হচ্ছেও বটে। শুধু কি তা-ই, এখন ঘরের সৌন্দর্যবর্ধনের উপকরণ ও গয়নাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই রহস্যময় সামুদ্রিক শাঁস।

 কয়েক বছরের ফ্যাশন দুনিয়ায় চোখ রাখলে দেখা যাবে হীরা, রুবি, সোনা, রুপার পাশাপাশি সামুদ্রিক শাঁস দিয়ে তৈরি গয়নাও সাজবাক্সে সগর্বে জায়গা করে নিয়েছে; বিশেষ করে তরুণীরা লুফে নিচ্ছেন অভিনব এই গয়না। সংরক্ষণ করা সহজ, সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই বলে সামুদ্রিক শাঁস দিয়ে তৈরি গয়না অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।

সাগরবক্ষ থেকে সংগৃহীত শাঁস নিয়ে গয়না তৈরি করছে মনসিজ ক্র্যাফট। এসব গয়না তৈরিতে মূলত প্রাকৃতিক কড়ি, শামুক, ঝিনুক, করতাল, চাষ করা মুক্তা ও পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। অলংকারের নকশায় কখনো জ্যামিতিক প্যাটার্ন, আবার কখনো প্রাকৃতিক প্যাটার্ন প্রাধান্য পেয়েছে।

মনসিজ ক্র্যাফটের কর্ণধার ও শিল্পী সাদিয়া শারমিন জানান, এখন বিয়ের মতো জাঁকজমক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে কড়ি, শামুক, ঝিনুকের গয়না ব্যবহার করছেন নারীরা; বিশেষ করে সুতি, খাদি, বাটিক, টাইডাই, তসরের কাপড়ের সঙ্গে এ ধরনের গয়না দারুণ মানিয়ে যায়। সাদিয়া শারমিন বলেন, ‘সামুদ্রিক শাঁস দিয়ে আমরা কানের দুল, লকেট, নেকলেস তৈরি করেছি, সেগুলোর দামও হাতের নাগালে।’ সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে এগুলো।

মনসিজ ক্র‍্যাফট ছাড়াও দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের তৈরি গয়নায় সামুদ্রিক শাঁস, বিশেষ করে কড়ির ব্যবহার করছে। অনলাইনের গয়নার বিভিন্ন পেজ, যেমন টেনটেরালী, ত্রিনিত্রি, জায়া, বৃত্ত তাদের তৈরি কাস্টমাইজ আংটি, কানের দুল, নেকলেস, হাতের বালায় সামুদ্রিক শাঁসের ব্যবহার করছে। নিজের সংগ্রহে জমিয়ে রাখা শামুক, ঝিনুক, মুক্তা, কড়ি দিয়ে অনেকে নিজেই বানিয়ে নিচ্ছেন নিজের পছন্দমতো গয়না।

সামুদ্রিক শাঁসের উপযুক্ত ব্যবহার প্রসঙ্গে সাদিয়া শারমিন বলেন, ‘শামুক ও ঝিনুক পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখে। তাই পর্যটক কিংবা শেল সংগ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের উচিত, জীবিত সামুদ্রিক শাঁস ধ্বংস না করে শুধু ভেসে আসা মৃত শাঁসগুলো ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা।’ 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ