আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাগেরহাটের ফকিরহাটে এ বছর রোপা আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা গেছে। মাঠে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধানগাছ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনের বিষয়ে আশাবাদী কৃষক।
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উঁচু আবাদি জমিতে হৃষ্টপুষ্ট ধানের গোছায় শিষ এসেছে। নিচু জমির লালমোটা ও সাদামোটা ধানের শিষ একটু দেরিতে আসে। এ বছর পামরী, মাজরা, চুংগী, গান্ধী ও লেদা পোকার মতো ধানের অপকারী পোকার তেমন আক্রমণ হয়নি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। যার মধ্যে হাইব্রিড ৪৫০ মেট্রিক টন, উফশী ১১ হাজার ২০ মেট্রিক টন ও স্থানীয় ময়নামতি, জটা বালাম, সাদামোটা, লালমোটা, বাদশাভোগ জাতের ধান ৭৬০ মেট্রিক টন। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও ব্লক সুপারভাইজারদের দাবি, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে।
উপজেলার বাহিরদিয়া ইউনিয়নের কৃষক আহম্মদ শেখ বলেন, এবার ১৩ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছেন। শেষ আশ্বিন পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় বাড়তি সেচ লাগেনি, গাছও ভালো হয়েছে। সঠিক বাজারমূল্য পাবেন বলে আশা করেন তিনি।
পিলজংগ ইউনিয়নের চাষি হরি দাশ বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। তার মধ্যে ১০ কাঠা জমিতে লালমোটা ও ৫ কাঠা জমিতে দেশি ময়নামতি ধান লাগিয়েছেন। জমির ধান ভালো হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। ফসল কাটা পর্যন্ত কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাছরুল মিল্লাত বলেন, মাঠের সার্বিক অবস্থা ভালো। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ধানের উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করেন তিনি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া, ধানখেতে জরিপ করে পোকা ও বালাই চিহ্নিত করা, কৃষক প্রশিক্ষণ, কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ এবং কৃষি উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। কোনো বিপর্যয় না হলে এবং দাম ঠিক থাকলে কৃষকেরা এবার লাভবান হবেন।