নেত্রকোনার মদনে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাগুরিয়া বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নৌকার কর্মী জাওলা গ্রামের মতিউর রহমান গতকাল রোববার মদন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ হামলার জন্য বিএনপি নেতা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু তাহের আজাদ ও তার কর্মীদের দায়ী করেছেন।
তবে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু তাহের আজাদ তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, প্রচারে বাধা দিতে এবং পুলিশি হয়রানির জন্য এই মামলা করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, আসামিদের নাম বলা যাবে না। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাফায়াত উল্লাহ রয়েলে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী (আনারস প্রতীকে) স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাদের আজাদ। দুজনেই এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। গত শনিবার রাতে ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাগুরিয়া বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহের আজাদ তাঁর কর্মীদের নিয়ে প্রচারে যান। এ সময় নৌকার কর্মীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহেরের তর্ক হয়।
একপর্যায়ে আবু তাহের ও তাঁর কর্মীরা খাগুরিয়া বাজারের আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ও নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় দুপক্ষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় নৌকার কর্মী জাওলা গ্রামের মতিউর রহমান বাদী হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে মদন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু তাহের আজাদ বলেন, শানিবার রাতে আমার কর্মীদের নিয়ে খাগুরিয়া বাজারে প্রচারে যাই। নৌকার কর্মীরা আমার প্রচারে বাধা দেয়। তাঁরা আমাদের চারদিক থেকে আটকে রাখে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে আমরা চলে আসি। পরে নৌকার প্রার্থী রয়েলের লোকজন বটতলা বাজারে আমার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেন। নৌকার কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের ক্যাম্প ভাঙচুর করে আমাদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরে ঘটনায় এজহার নিয়ে থানায় গেলে ওসি সাহেব অভিযোগ গ্রহণ না করে আমাকে ফিরিয়ে দেন। আমার ক্যাম্প ভাঙচুর ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে কাঁপনের কাপড় পড়ে সংবাদ সম্মেলন করেছি।
নৌকার প্রার্থী সাফায়াত উল্লাহ রয়েলে জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহের আজাদ ও তাঁর লোকজন খাগুরিয়া বাজারে আমার ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমার কোনো কর্মী বা সমর্থক বটতলা বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্যাম্প ভাঙচুর করেনি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হামিদ ইকবাল জানান, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, কাইটাইল ইউপি নির্বাচনে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি।