হোম > ছাপা সংস্করণ

ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট ধান

মির্জাপুর প্রতিনিধি

মির্জাপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় শতাধিক একর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার কদিম দেওহাটা ও মীর দেওহাটা এলাকার দুই শতাধিক কৃষক এই অভিযোগ করেন।

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এসব এলাকার ১০-১২টি ইটভাটার চিমনির কালো ধোঁয়ায় আশপাশের বোরো ধানের পাতা লালচে ও বিবর্ণ হয়ে গেছে। ধানের ছড়া নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি ছড়ায় চিটার পরিমাণ বেশি। এমনকি ধানখেতের পাশে থাকা বিভিন্ন সবজিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের কদিম দেওহাটা, মীর দেওহাটা এলাকায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। এসব ইটভাটার আশপাশে রয়েছে ফসলের বড় মাঠ। এ মাঠে এবং আশপাশে শতাধিক একর জমিতে চাষ হয়েছে বোরো ধান। তবে বোরো আবাদের শুরু থেকে এসব ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়।

সম্প্রতি এসব ভাটায় ইট পোড়ানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া চিমনির বদলে নিচ দিয়ে বের হয়। এর প্রভাবে আশপাশের বোরো ধানখেতের পাতা পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। পাকার আগেই পুরো জমির ধানের পাতা ও ছড়া লালচে এবং বিবর্ণ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে শতাধিক একর জমির বোরো খেতের ধান নষ্ট হয়েছে। এসব ধানখেতের কোনোটার অর্ধেক, আবার কোনোটার পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

মীর দেওহাটা গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, তাঁর সাত একর বোরো আবাদের জমি রয়েছে। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে চারা রোপণের পর থেকেই গাছের পাতা বিবর্ণ হতে থাকে। এই অবস্থায় ধানের চারা বড় হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে পাতার রং দেখে মনে হয় পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ধানের ছড়া নষ্ট হয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ফলনও অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

ওই গ্রামের আব্দুল খারেক বলেন, ৬০ শতক জায়গায় বোরো ধান চাষ করেন তিনি। চার-পাঁচ বছর আগে ওই স্থানে প্রথম ইটভাটা নির্মাণ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে তা বাড়তে থাকে। ইটভাটা হওয়ার আগে জমি থেকে তাঁরা যথেষ্ট ধান পেতেন। কিন্তু তিন বছর ধরে জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।কদিম দেওহাটা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৩০ শতক জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। আগে যে ধান পেতাম, তিন বছর ধরে ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে।

গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আবদুল হাই, উপজেলার গোড়াইল গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন, মীর দেওহাটা গ্রামের মোহাম্মদ আলী, ফজল মিয়া, মো. আমান উল্লাহ, শহিদুর রহমান, ইউসুফ মিয়ার ইটভাটাসহ ১০-১২টি ভাটার ধোঁয়ার কারণে ফসলের এমন ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইটভাটার মালিক মোহাম্মদ আলী বলেন, ঈদের আগেই তাঁর ভাটার আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। তাঁর ভাটার কারণে কোনো ধানখেত নষ্ট হয়নি।

ইটভাটার মালিক মো. আমান উল্লাহ বলেন, তাঁর ইটভাটার চিমনির উচ্চতা প্রায় ১৩০ ফুট, যার ধোঁয়া আকাশে মিলিয়ে যায়। ফলে তাঁর ভাটার কারণে ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। সাধারণত নিচু চিমনির ধোঁয়ায় ধানখেতের ক্ষতি হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্চয় কুমার পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই এলাকায় বোরো ধানখেতের ক্ষতির কথা শুনেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তিনি এসব এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানান।
ইউএনও হাফিজুর রহমান জানান, ‘এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসারকে তদন্ত করে জানাতে বলেছি। ’ 
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জমির উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তাঁর অফিসে কোনো অভিযোগ আসেনি। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ