‘শুরুই হইতেছে ১৭টা দিয়া। সামনে কী আছে আল্লাহই জানে’—রবিউল ইসলাম নামে এক নিয়োগপ্রত্যাশী আক্ষেপ করে বললেন এমন কথা। দুই মাস ধরে প্রতি সপ্তাহান্তে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষায় থাকায় রবিউলের মতো আক্ষেপ আছে অন্যদেরও। করোনার কারণে বছর দেড়েক আটকে থাকা চাকরির পরীক্ষাগুলোর সূচি একসঙ্গে পড়ায় বেশ বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। বারবার দাবি জানানোর পরও এ সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি। বরং নিয়োগ প্রত্যাশীদের আক্ষেপ আর দীর্ঘশ্বাস তুচ্ছ করে আজ শুক্রবার মাসের প্রথম দিনেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আরও ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা।
আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেশের ২৮টি জেলায় এক-যোগে অনুষ্ঠিত হবে খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শকের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৬ লাখের বেশি প্রার্থী। এ ছাড়া আজ রয়েছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জনতা ব্যাংক লিমিটেড ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা।
একই সময়ে একাধিক পরীক্ষা থাকায় একটা বাদ দিয়ে আরেকটা পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে প্রার্থীদের। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন চাকরির বয়স শেষ হতে বসা নিয়োগপ্রার্থীরা। তেমনই একজন নুরুল ইসলাম। তিনি জানালেন, এ মাসেই তাঁর বয়স ৩০ পেরোবে। নতুন করে কোনো চাকরির পরীক্ষায় আর হয়তো আবেদন করা হবে না। গত দেড় বছরে যে চাকরিগুলোতে আবেদন করেছিলেন এই দুই-তিন মাসেই সব পরীক্ষা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একই সময়ে একাধিক পরীক্ষা থাকায় একটি বেছে নিয়ে বাকিগুলো বাদ দিতে হয়েছে। এতে অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
এই সমস্যা এড়াতে চাকরি প্রার্থীরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলছেন। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আপাতত তেমন কোনো আশ্বাস পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, যেই সমস্যাটা দুই- এক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, সেটা নিয়ে যময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইনও জানালেন, দুই-এক মাসের মধ্যে চাকরির পরীক্ষার জট কেটে যাওয়ার কথা। পরীক্ষার জট এড়াতে পিএসসি বিসিএস ছাড়া শুক্র-শনিবারে বড় কোনো পরীক্ষাও আর নিচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের পরীক্ষাগুলোর বিষয়েই কেবল বলতে পারি। অন্যদেরটা জানি না।