হোম > ছাপা সংস্করণ

বিএনপির আন্দোলন: এক দফায় প্রস্তুত মাঠ

রেজা করিম, ঢাকা

১০ দফা আর নয়। চলমান আন্দোলনকে এবার এক দফায় রূপ দিতে চায় বিএনপি। সেই দফা হলো সরকার পতনের। একই চাওয়া দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্রদেরও। চূড়ান্ত পর্যায়ের সেই আন্দোলনের জন্য মাঠের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতও করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় এক দফার ওই আন্দোলনের ঘোষণা আসবে বলে দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগে যুগপৎ আন্দোলনকে চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে এরই মধ্য রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার যৌথ রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে শিগগির।

এক দফার আন্দোলনের পরিকল্পনা বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, এই বিষয়ে আলোচনা চলছে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এক দফার আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা চলছে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে। মাঠের কর্মীরাও এ জন্য প্রস্তুত। দিন-তারিখ আগে বলা যাচ্ছে না। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত চলে আসবে। সেটা যেকোনো সময় হতে পারে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল মঙ্গলবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। সময়মতো সব জানানো হবে।’

যদিও বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, এক দফার আন্দোলনের জন্য প্রাথমিকভাবে আগামী জুলাইকে বেছে নেওয়া হতে পারে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি 

থেকেই রাজপথে পুরো শক্তি নিয়ে নেমে সরকারকে একটা বড় ধাক্কা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাওয়া হবে। অর্থাৎ সরকারের পতন ঘটানোর পরেই আন্দোলনে সমাপ্তি ঘটবে। এ ব্যাপারে দলের বিভাগীয় নেতাদের কাছে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ এসেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে।

তবে সব ধরনের কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে ‘শান্তিপূর্ণ’ অবস্থান নেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পরে দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। গত সোমবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও কর্মসূচি পালনে সতর্ক থাকতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারকে কোনোভাবেই আস্থায় নিচ্ছে না বিএনপি। দলটির বদ্ধমূল ধারণা, এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করছে সরকার। যে কারণে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার পতনসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে তারা।

সেই আন্দোলনকে এখন এক দফায় এনে শুধু সরকার পতনের জন্য রাজপথে নামার কথা বলছে দলগুলো। এ জন্য মাঠ প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। তাঁরা বলছেন, এখন আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের পিছিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই, মার খাওয়ারও সুযোগ নেই। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। সরকার পতনের যে লড়াই শুরু করেছে দল, সেই লড়াইয়ে অবশ্যই জিততে হবে। এ জন্য সব ধরনের কর্মসূচি পালনের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) বিলকিস আক্তার জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চললেও আমাদের মূল দাবি সরকারের পতন। এই দাবি আদায়ে সব ধরনের কর্মসূচি পালনের জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। এখন আমাদের আর পেছনে যাওয়ার জায়গা নাই। এখন প্রতিরোধ করতে হবে। যে যুদ্ধে নেমেছি, সেই যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।’

এদিকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনকে সামনে রেখে যুগপৎ আন্দোলনকে চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। রাষ্ট্র মেরামতের অভিন্ন রূপরেখা নিয়ে সৃষ্ট জট অবশেষে খুলেছে। রূপরেখা নিয়ে সমমনাদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতের অমিলে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। এর প্রভাব পড়েছে যুগপৎ আন্দোলনে।

অবশেষে সমমনাদের বেশ কিছু প্রস্তাব সংযোজন-বিয়োজন করে ৩১ দফার একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিএনপির ২৭ দফার সঙ্গে নতুন ৪টি দফা যুক্ত করা হয়েছে। এতে গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা, কালাকানুন বাতিল ও মুক্তিযুদ্ধে যাঁর যাঁর অবদানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব যুক্ত করা হয়েছে।

একই সঙ্গে সমতা, ন্যায্যতা, পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতি ও স্বীকৃত আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সমস্যাদির সমাধান করার প্রস্তাবও থাকছে। সবার বোঝাপড়ার ভিত্তিতে তৈরি এই রূপরেখা চলমান আন্দোলনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছেন বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর নেতারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মতো একটা ঘোষণা হয়তো আমরা অচিরেই জাতিকে দিতে পারব। এটার মধ্য দিয়ে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের দিকে দেশটাকে নিয়ে যেতে পারব। খুব দ্রুতই এই ঘোষণা আসবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ