ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান।
ট্রাক্টর-পাওয়ার টিলারের যুগে গরুর হাল চোখে পড়ে না বললেই চলে। সেখানে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ অনেকটাই বিরল।
উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের পাশে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করতে দেখা যায় মোখলেছুরকে।
এ সময় কথা হলে মোখলেছুর আজকের পত্রিকাকে জানান, বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম অনেক কম। বাজারে গরুর দাম বেশি। তিনি দুই হাজার ৮০০ ও দুই হাজার টাকায় ছয় মাস বয়সী দুটি বাচ্চা ঘোড়া কিনেছিলেন। তার একেকটি ঘোড়ার বর্তমান বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা। ঘোড়া দুটি দিয়ে টানা ছয় মাস ধরে জমি চাষ করছেন। নিজের জমির পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে অন্যের জমিতেও হালচাষ করছেন। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মোখলেছুর আরও জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়া বেশি হাঁটে-চলে। ফলে একই সময়ে তিনগুণ বেশি জমি চাষ করা যায়। একদিনে তিন বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়। প্রতিদিন সকাল আটটায় শুরু করে বিকেল পর্যন্ত জমি চাষ করে দৈনিক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। প্রতিদিন ঘোড়ার খাদ্য বাবদ খরচ হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবারের ব্যয়ভার চলে। জমি চাষ মৌসুম শেষে ঘোড়া দিয়ে গাড়ি চালান মোখলেছুর।
জমি মালিক মহদীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়া আজকের পত্রিকাকে জানান, ঘোড়া দিয়ে হাল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়। মই দেওয়ার সময় জমির উঁচু-নিচু ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ হয়। এ ছাড়া একদিনে অনেক বেশি জমি চাষ করা যায় বলে সময় সাশ্রয় হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাঁর দুই বিঘা জমিতে হাল ও মই দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।
মহদীপুর ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ‘এলাকার চাষিদের কাছে মোখলেছুরের ঘোড়ার হালের বেশ চাহিদা রয়েছে।’