কাম্যুর নামটি শুনলে প্রথমেই ‘দ্য মিথ অব সিসিফাস’ অথবা ‘আউটসাইডার’-এর কথা মনে পড়ে। ‘দ্য প্লেগ’-এর নামটিও মনে আসতে পারে। প্লেগের কাহিনিটা স্মরণ করলে এ সময়ের অতিমারির স্বরূপও উদ্ঘাটিত হবে।
আলজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিককে ফরাসি সাহিত্যিক হিসেবেই দেখা হয়। অস্তিত্ববাদের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। জাঁ পল সার্ত্রের সঙ্গে একই সারিতে তাঁর নাম।
কাম্যুর বাবা প্রথম মহাযুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন। কাম্যু তখন এক ফোটা এক বাচ্চা। বলা এবং শোনায় সম স্যা ছিল মায়ের। পড়ালেখাও জানতেন না। তাই স্বামীর মৃত্যু তাঁকে এমন এক পৃথিবীর সামনে এনে ফেলল, যার চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না। কেউই তাঁর সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেনি। কারখানায় কাজ করেই সন্তানকে বড় করেছেন।
অনেকে না-ও জানতে পারেন, ছেলেবেলায় ফুটবল হয়ে উঠেছিল কাম্যুর নেশা। গোলরক্ষক হিসেবে নাম করেছিলেন। কিন্তু ১৯৩০ সালে যক্ষ্মা এসে সেই স্বপ্নকে মলিন করে দিল। কিন্তু সেই যক্ষ্মা তাঁকে সিগারেট ছাড়াতে পারল না। এমনকি তিনি তাঁর পোষা বিড়ালের নাম রেখেছিলেন ‘সিগারেট’। এখনো যদি ইন্টারনেটে কাম্যুর ছবি খোঁজা হয়, তাহলে সিগারেট ঠোঁটে তাঁর ছবিই দেখা যাবে বেশি।
কাম্যুর প্রিয় লেখক ছিলেন ফিওদর দস্তইয়েভ্স্কি। সাহিত্যের উৎসাহী পাঠক জানেন, দস্তইয়েভ্স্কির লেখায় কখনো ভাবনার সুতো ছিল ছেঁড়া, কখনো বাক্যের গঠনটি ছিল আজব, কিন্তু তাতে দস্তইয়েভ্স্কির হৃদয়ের ক্রন্দনটি ঠিকই ফুটে উঠত। সেটাই কি কাম্যুকে এই মহান রুশ লেখকের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল?
জাঁ পল সার্ত্রের কাছের বন্ধু ছিলেন তিনি, সার্ত্রের লেখা নাটকে অভিনয়ও করেছেন। তবে দস্তইয়েভ্স্কির প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা তাঁকে দস্তইয়েভ্স্কির উপন্যাস থেকে তৈরি নাটকেও অভিনয় করিয়ে ছেড়েছিল। ‘কারামাজোভ ভ্রাতৃবর্গ’ উপন্যাস থেকে তৈরি নাটকে ইভান কারামাজোভের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ১৯৬০ সালের এই দিনে আলবের কাম্যু মারা যান।
সূত্র: ভিভারেইতডটরু