ভালো পরিবার দেখে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন নন্দিনীর মা-বাবা। বিয়ের রাত থেকে সে স্বামীর যৌন বিকৃতির শিকার! আদর নয়, ফুলশয্যার রাত থেকেই তার ওপর পাশবিক অত্যাচার শুরু। শ্বশুরবাড়ির কেউ বিষয়টিকে পাত্তাই দেয় না! ব্যতিক্রম নন্দিনীর বড় জা। তার চোখ এড়ায়নি নতুন বউয়ের ঠোঁটের কোণে কালশিটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ অপরাধ কি না তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত দেননি আদালত। প্রশাসনের দাবি, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী স্বামী তাঁর স্ত্রীর ওপর জোর খাটাতেই পারেন! সেখানে কোনো অন্যায় নেই। সারা শরীরে স্বামীর কথিত ‘ভালোবাসা’, অত্যাচারের দাগ কারও চোখে পড়বে না? রোজ রাতে সেই মেয়েই ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর সঙ্গ দেবে!
এমন সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে ওয়েব সিরিজ ‘সম্পূর্ণা’। সিরিজটি বানিয়েছেন সায়ন্তন ঘোষাল। ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে এই সিরিজের ট্রেলার। হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি এই সিরিজের মাধ্যমে এমন প্রশ্ন নিয়ে আদালতে যাবেন সম্পূর্ণা চরিত্রের সোহিনী সরকার। রহস্য-রোমাঞ্চ ছেড়ে হঠাৎ কেন এমন সামাজিক ইস্যু তাঁর সিরিজে? পরিচালক সায়ন্তন বলেন, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ আগের তুলনায় অনেক সচেতন। কিন্তু সবাই নন। তাই বৈবাহিক ধর্ষণ রয়েই গেছে। একে নির্মূল করতে, নারীর ‘না’কে সম্মান জানাতেই এই চেষ্টা। যদি এতে হুঁশ ফেরে সমাজের।’
‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিষয়টি ভীষণ নাড়া দিয়েছে। নারী হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবেও। এই সিরিজ কিছু মানুষকে সচেতন করতে পারলেও সবার পরিশ্রম সার্থক। এখনো সমাজের গভীরে এই সমস্যা রয়েই গেছে।
—সোহিনী সরকার
সিরিজে সোহিনীর ছোট জা রাজনন্দিনী পাল। পর্দায় তাঁর ওপরে প্রতি রাতে পাশবিক অত্যাচার করেন অনুভব কাঞ্জিলাল। যা দেখেও দেখতে চান না ‘ভাশুর’ প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘শাশুড়ি’ লাবণি সরকার, ‘শ্বশুর’ রজত গঙ্গোপাধ্যায়। বাস্তবে বিষয়টি নিয়ে কী মত সোহিনীর? অভিনেত্রীর কথায়, ‘বিষয়টি ভীষণ নাড়া দিয়েছে। নারী হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবেও। এই সিরিজ কিছু মানুষকেও সচেতন করলে সবার পরিশ্রম সার্থক। নারীর ভালো-মন্দ উভয় ক্ষেত্রেই স্বাধীন মতপ্রকাশ করতে পারলে তবেই সে পূর্ণতা পায়। এখনো সমাজের গভীরে এই সমস্যা রয়েই গেছে। বিবাহ হোক বা না হোক, যেকোনো পরিস্থিতিতে নারীর প্রত্যাখ্যানকে সম্মান জানানো উচিত।’